শাহরুখ খান ও রানি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিরবাহা হাঁসদা। বৃহস্পতিবার কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। নিজস্ব চিত্র।
যাঁদের দেখে স্বপ্ন দেখা হাতের সামনে তাঁরাই। মন্ত্রী হওয়ার সুবাদেই সাঁওতালি সিনেমার মহানায়িকা পেলেন সুযোগ। তবে মন্ত্রী বা মহানায়িকা হিসেবে নয় জঙ্গলমহলের মেয়ে হিসেবেই বিরবাহা হাঁসদা শাহরুখ খানকে লালমাটিতে আসার অনুরোধ করলেন। জানালেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা অপরূপ জঙ্গলমহলে স্বল্প খরচে ছবির দৃশ্য গ্রহণের অনেক সুযোগ রয়েছে। অমিতাভ বচ্চনকে জানালেন জঙ্গলমহলে আসার আমন্ত্রণ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ২৮ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে শাহরুখের সঙ্গে বিরবাহার পরিচয় করিয়ে দেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বিরবাহা শাখরুখকে বলেন, জঙ্গলমহলের পাহাড়-জঙ্গল-প্রকৃতির মাঝে হিন্দি ছবির সেট ফেলা হলে স্থানীয় অর্থিনীতি সমৃদ্ধ হবে। পাশাপাশি, কম খরচে শ্যুটিং করার সুযোগও মিলবে। সেই স্বল্প আলাপচারিতার মাঝে উৎসবের উদ্বোধক অমিতাভ বচ্চনকেও জঙ্গলমহলে আসার আমন্ত্রণ জানান বিরবাহা। কথা হয় রানি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। বৃহস্পতিবার উৎসব মঞ্চে জয়া বচ্চনকে উত্তরীয় পরিয়ে ও হাতে উৎসবের স্মারক তুলে দিয়ে সম্মানিত করেন বিরবাহা। আদিবাসী প্রথার গোলাপি রঙের পাঞ্চি শাড়ি পরা বিরবাহা উৎসব মঞ্চে অতিথি-আসনেও ছিলেন। জানা গিয়েছে, উৎসব কমিটির তরফে আগাম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, জয়া বচ্চনকে সম্মানিত করবেন বিরবাহা। বিরবাহা কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচচ্চিত্র উৎসব কমিটির সদস্য। প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও বিরবাহা পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারপার্সন। এ ছাড়া একাধিক সরকারি কমিটির মাথায় রয়েছেন তিনি। তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, তৃণমূলকে সামনে রেখে নিজের পুরনো দল ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন) কে সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন মন্ত্রী। এ সব সত্ত্বেও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিরবাহাকে যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, তাতে দলের অন্দরে জল্পনা যে মুখ্যমন্ত্রী বিরবাহার উপর ভরসা রেখেই চলছেন। বিরবাহা অবশ্য বলছেন, ‘‘ভাল কাজ করতে গেলে নানা সমালোচনা হবে। আমি কাজে বিশ্বাসী। সমালোচনা আমাকে সঠিকপথে চলে সাহায্য করে।’’
বিরবাহা জানাচ্ছেন, উত্তম কুমার অভিনীত মরুতীর্থ হিংলাজ থেকে হাল আমলের আবির চট্টোপাধ্যায় অভিনীত দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন—গত ছয় দশকে আড়াই ডজনেরও বেশি বাংলা ছবির শ্যুটিং হয়েছে ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন এলাকায়। ঝাড়গ্রাম জেলায় রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা পাহাড়, টিলা, জঙ্গল, নদী, প্রাচীন পুরাকীর্তি, কয়েকটি প্রাচীন রাজবাড়ি ও জমিদার বাড়ি। এমন জায়গায় কম খরচে শ্যুটিং করার সব রকম উপাদান মজুত রয়েছে। তাই আরও অনেক বেশি সিনেমার শ্যুটিং এখানে হলে পর্যটনের প্রসারে সেটা সহায়ক হবে বলে আশা ব্যবসায়ীদেরও।