ঝাড়গ্রাম শহরে পদযাত্রা। বৃহস্পতিবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
বৃহস্পতিবারের মেঘলা বিকেলে ঝিরঝিরে বৃষ্টির মাঝেও উপচে পড়ছে উত্সব প্রাঙ্গণ। ২৬টি প্রদীপ জ্বালিয়ে ২৬তম ‘রং মাটি মানুষ’ উত্সবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন বিশিষ্ট নাট্যকর্মী দেবশঙ্কর হালদার ও প্রবীণ চিত্রশিল্পী কৃষ্ণেন্দু চাকী। দেবশঙ্করবাবু জানালেন, বিনা আমন্ত্রণেই তিনি এদিন চলে এসেছেন উত্সবের টানে। আপ্লুত দেবশঙ্করবাবুর কথায়, “আগে একাধিকবার উদ্যোক্তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু নাটকের কাজে ব্যস্ততার জন্য আসতে পারি নি। আজ নাটকের শো বাতিল হয়েছে। মোবাইল ফোনে কথা প্রসঙ্গে বন্ধুবর কবি শুভ দাশগুপ্তর কাছে শুনলাম রং মাটি মানুষের সূচনা হচ্ছে আজ। তাই সপরিবারে ছুটে এলাম।” আর প্রবীণ চিত্রশিল্পী কৃষ্ণেন্দুবাবুর কথায়, “গত বছর প্রথমবার উত্সবে এসেছিলাম। এবারও আমন্ত্রণ পেয়ে লোভ সামলাতে না-পেরে চলে এসেছি।”
নতুন বছরের প্রথম দিনে ঝাড়গ্রাম আর্ট অ্যাকাডেমির উদ্যোগে আয়োজিত ২৬ তম বর্ষের ‘রং মাটি মানুষ’ উত্সব ঘিরে জমজমাট অরণ্যশহর। উত্সবের কাউন্ট ডাউন অবশ্য এ দিন সকালেই শুরু হয়ে যায়। সকাল ন’টায় একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা দিয়ে উত্সবের সূচনা হয়। মেঘলা আকাশ উপেক্ষা করেই প্রভাতী ওই পদযাত্রায় পা মেলান শতাধিক কচিকাঁচা ও আবালবৃদ্ধবণিতা। বিকেল পাঁচটায় অ্যার্ট অ্যাকাডেমি প্রাঙ্গণে উত্সবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরে প্রদর্শনী ও স্টল ঘুরে দেখলেন দেবশঙ্করবাবু ও কৃষ্ণেন্দুবাবু-সহ বিশিষ্ট গুণিজনেরা। আর্ট অ্যাকাডেমির নিজস্ব ওয়েব সাইটেরও উদ্বোধন হল এ দিন। এ ছাড়া সংস্থার কচিকাঁচাদের আঁকা ছবির সংকলন নিয়ে একটি স্মারকপত্রিকাও প্রকাশিত হয়েছে। পত্রিকাটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন কৃষ্ণেন্দু চাকী।
উত্সবে এ বছরের ভাবনা: ‘গাছপালা পশুপাখি, আমরা সবার সঙ্গে থাকি’। উত্সবের প্রদর্শনী ও কর্মশালায় এবং উত্সব প্রাঙ্গণে এই ভাবনারই বহিঃপ্রকাশ রয়েছে। এবার সংস্থার রামকিঙ্কর গ্যালারিতে আয়োজিত প্রদর্শনীতে কচিকাঁচাদের পাশাপাশি, বিভিন্ন বয়সীদের আঁকা ছবি ও ভাস্কর্য মিলিয়ে প্রায় হাজার খানেক শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে। এ ছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার ১৫ জন হস্তশিল্পী তাঁদের শিল্পকর্ম নিয়ে হাজির হয়েছেন উত্সব প্রাঙ্গণে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আড্ডা ও আলোচনার মিশেলে মিলন মেলায় পরিণত উত্সব-অঙ্গন। উত্সব চলবে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত।