শালবনির ভাদুতলায় দুর্ঘটনার পর। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
বাস-লরির সংঘর্ষে মৃত্যু হল এক মহিলা-সহ দু’জনের। কমবেশি জখম হয়েছেন ৩৩ জন। বৃহস্পতিবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে, শালবনি থানার ভাদুতলার কাছে। মৃত মাসুদা বিবি (৫০) এবং শেখ ইমতাজুল (৪৭) দু’জনেই খড়্গপুর-তারকেশ্বর রুটের বেসরকারি বাসটির যাত্রী ছিলেন। মাসুদা বিবির বাড়ি খড়্গপুরের ভবানীপুরে। আর ইমতাজুল মেদিনীপুরের হাতিহল্কার বাসিন্দা ছিলেন। দুর্ঘটনার পর স্থানীয় মানুষজনই উদ্ধারকাজ শুরু করেন। জখমদের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশ। বাস এবং লরিটিকে আটক করা হয়েছে। লরির চালক-খালাসি পলাতক। আর বাসের চালক-কর্মী চিকিত্সাধীন।
দুর্ঘটনাটি ঘটে এ দিন সকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ। বাসটি খড়্গপুর থেকে তারকেশ্বর যাচ্ছিল। আর লরিটি শালবনির দিক থেকে মেদিনীপুরের দিকে আসছিল। ভাদুতলার কাছে বাস-লরির মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। বাসটি উল্টে যায়। আর লরিটি রাস্তা থেকে অনেকটা নেমে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দু’জনের। বেশ কয়েকজন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এই বাসে করে নিয়মিত যাতায়াত করেন। দুর্ঘটনায় তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন। আহত যে ৩৩ জনকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছে তার মধ্যে ৮ জন মহিলা। কয়েকজনের অবস্থা আবার আশঙ্কাজনক। এ দিনের দুর্ঘটনায় শান্তনু ঘোষ নামে এক যাত্রীর ডান হাত কাটা পড়েছে। জখমদের সকলকে তড়িঘড়ি হাসপাতালের ওয়ার্ডে শয্যা দেওয়া যায়নি। অনেকেরই ঠাঁই হয় ওয়ার্ডের বাইরে মেঝেতে। সেখানেই চিকিত্সকেরা তাঁদের পরীক্ষা করেন।
জখম যাত্রী সুনীল রাণা বলেন, “বাসটি খুব জোরে যাচ্ছিল। ভাদুতলার কাছে একটি লরির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে।” দুর্ঘটনার খবর পেয়ে অনেকেই মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভিড় করেন। পরিস্থিতি দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জখমদের নামের একটি তালিকা করে ঝুলিয়ে দেন। জখমদের উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থাও করেন স্থানীয় মানুষজন। বেশ কিছুক্ষণের জন্য ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধও হয়ে পড়ে। একের পর এক বাস-লরি সারি দিয়ে সড়কের উপর দাঁড়িয়ে পড়ে। পরে অবশ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পুলিশ এসে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। স্থানীয়দের বক্তব্য, পুলিশি নজরদারির অভাবে জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে বহু বাস- লরি দ্রুত গতিতে যাতায়াত করে। ফলে, মাঝেমধ্যেই ছোটবড় দুর্ঘটনা ঘটে। বাস-লরির গতি নিয়ন্ত্রণে জাতীয় সড়কে নজরদারি বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।