গ্রাম্য বিবাদের জেরে লোধা সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে-কুপিয়ে খুন করার অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার সন্ধ্যায় ঝাড়গ্রাম থানার নেদাবহড়া অঞ্চলের চাকুয়া গ্রামে একটি দরিদ্র লোধা পরিবারের উপর চড়াও হন গ্রামবাসীর একাংশ। টাঙির কোপে গুরুতর জখম হন পেশায় দিনমজুর গণেশ মল্লিক (৪৮) ও তাঁর ভাই দীপক মল্লিক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দু’জনকে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রবিবার রাতেই গণেশবাবুকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সোমবার বিকেলে মেদিনীপুরের হাসপাতালে গণেশবাবুর মৃত্যু হয়। দীপকবাবু ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই ঘটনায় সোমবার বিকেলে ৯ জনের বিরুদ্ধে ঝাড়গ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন গণেশবাবুর বাবা লালমোহন মল্লিক। অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার রাতে চার অভিযুক্ত বুদ্ধেশ্বর মাহাতো, সুনীল মাহাতো, রাজীব মাহাতো ও শঙ্কর মল্লিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, বাকি পাঁচ অভিযুক্ত পলাতক। ধৃত চার জনকে মঙ্গলবার ঝাড়গ্রামের প্রথম এসিজেএম আদালতে তোলা হলে তদন্তের স্বার্থে তাঁদের তিনদিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চাকুয়া গ্রামে একটি জলের পাম্প ভাঙাকে কেন্দ্র করে রবিবার সন্ধ্যায় উত্তেজনা ছড়ায়। পেশায় দিনমজুর গণেশ মল্লিক-ই ওই পাম্পটি ভেঙেছে সন্দেহে গ্রামের কয়েকজন লাঠি-টাঙি নিয়ে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়। গণেশবাবুর মাথায় টাঙির কোপ মারা হয়। গণেশবাবুকে বাঁচাতে গিয়ে লাঠির আঘাতে ও টাঙির কোপে জখম হন তাঁর ভাই দীপকবাবুও। তাঁদের বৃদ্ধ বাবা লালমোহনবাবুকেও মারধর করা হয়। অভিযোগ, মহিলা ও শিশুদেরও লাঠিপেটা করা হয়।
গণেশবাবুর মৃত্যুর ঘটনার নিন্দা করেছে লোধা-শবর কল্যাণ সমিতি। সংগঠনের সম্পাদক বলাই নায়েক বলেন, “জঙ্গলমহলে অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলেই আদিম উপজাতি ভুক্ত লোধাদের অভিযুক্ত করা হয়ে থাকে। এই প্রবণতা উদ্বেগজনক। অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি করছি।”