আজ শেষ সম্মেলন

পুর-এলাকায় দুর্বলতার কথা মানল সিপিএম

চলতি বছরে পশ্চিম মেদিনীপুরে ছ’টি পুরসভায় ভোট রয়েছে। তার আগে পুর-এলাকায় দলের দুর্বলতার কথা স্বীকার করে নিল সিপিএম। মেদিনীপুরে সিপিএমের জেলা সম্মেলনে নেতৃত্বের আরও স্বীকারোক্তি, পুরসভাগুলোতে বিরোধী দলের ভূমিকা যথাযথ ভাবে পালন করতে পারছে না সিপিএম। এ ক্ষেত্রে জেলাগত নজরদারিরও অভাব ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:২৮
Share:

চলতি বছরে পশ্চিম মেদিনীপুরে ছ’টি পুরসভায় ভোট রয়েছে। তার আগে পুর-এলাকায় দলের দুর্বলতার কথা স্বীকার করে নিল সিপিএম। মেদিনীপুরে সিপিএমের জেলা সম্মেলনে নেতৃত্বের আরও স্বীকারোক্তি, পুরসভাগুলোতে বিরোধী দলের ভূমিকা যথাযথ ভাবে পালন করতে পারছে না সিপিএম। এ ক্ষেত্রে জেলাগত নজরদারিরও অভাব ছিল।

Advertisement

খড়্গপুর, ঘাটাল, চন্দ্রকোনা, ক্ষীরপাই, খড়ার এবং রামজীবনপুর জেলার এই ছ’টি পুরসভায় আগামী মে মাসের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা। পুর-নির্বাচনকে ‘পাখির চোখ’ করে ইতিমধ্যে সংগঠন গোছানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। পুরভোটে সাফল্য পেতে এ বার শহর-ভিত্তিক পর্যবেক্ষকও নিয়োগ করেছে দল। এই পরিস্থিতিতে শহর এলাকায় দলের দুর্বলতা কাটানোর উপরও জোর দিচ্ছেন সিপিএম নেতৃত্ব।

গত রবিবার থেকে মেদিনীপুরে শুরু হয়েছে সিপিএমের ২২তম জেলা সম্মেলন। চলবে আজ, মঙ্গলবার পর্যন্ত। প্রথম দিন দলের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের উপস্থিতিতে সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পেশ করেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার। প্রতিবেদনেই পুর-এলাকায় দলের দুর্বলতার কথা মানা হয়েছে।

Advertisement

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘পুরসভাগুলোতে আমরা বিরোধী দলের ভূমিকায় আছি। সেখানে সঠিক ভাবে বিরোধী দলের ভূমিকা যথাযথ পালন করতে পারছি, এ কথা বলা যাবে না।...জনসংযোগ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমাদের খুবই দুর্বলতা আছে। আগামী দিনে পার্টিকে এ ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে পুর সাব কমিটি এবং পুর পার্টি টিমকে সক্রিয় ও সচল করতে হবে।’ শুধু স্থানীয় নেতৃত্বকে নয়, বিরোধী দলের ভূমিকা পালন না করতে পারার জন্য নিজেদেরও দুষেছেন নেতৃত্ব। বলা হয়েছে, ‘অবশ্যই এ কথা স্বীকার করতে হবে যে, পুরসভাগুলো পরিচালনার ক্ষেত্রে বা বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করার ক্ষেত্রে জেলাগত ভাবে নজরদারি বা হস্তক্ষেপ দুর্বল ছিল। আমরা সুনির্দিষ্ট ভাবে কোনও নির্দেশিকাও দিতে পারিনি। আগামী দিনে পুরসভা প্রসঙ্গে জেলা পার্টিকে এই দুর্বলতা কাটাতেই হবে।’

শহর এলাকা, বিশেষত মেদিনীপুর-খড়্গপুরে বিজেপির ভোট বৃদ্ধির কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, ‘জেলায় আটটি পুরসভা আছে। বর্তমানে আটটিতেই আমরা ক্ষমতায় নেই। গত ২০১০ সালের পুর-নির্বাচনে ছ’টি পুরসভায় নির্বাচন হয়। আমরা ঘাটাল, খড়ার, রামজীবনপুর ও খড়্গপুরে পরাজিত হই। ক্ষীরপাই পুরসভায় আমরা একক ভাবে বোর্ড গঠন করতে সক্ষম হই। চন্দ্রকোনা পুরসভায় ‘বেকার সমিতির’ সঙ্গে জোট গঠন করে বোর্ড গঠন করতে সক্ষম হই। কিন্তু ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর ‘বেকার সমিতি’ জোট ভেঙে তৃণমূলের সঙ্গে বোর্ড গঠন করে। এবং তৃণমূলের নেতৃত্বে চন্দ্রকোনা পুরসভায় বোর্ড গঠন করে। ক্ষীরপাই পুরসভার ক্ষেত্রেও ২০১৪ সালে আমাদের পার্টির প্রতীকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান সহ চারজন কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেয়। ফলে, তৃণমূল পুরবোর্ড গঠন করে।’

এর পরপরই বলা হয়েছে, ‘২০১৩ সালে ঝাড়গ্রাম এবং মেদিনীপুর পুরসভায় নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনে আমরা ঝাড়গ্রাম এবং মেদিনীপুর দু’টিতেই পরাজিত হই। বিশেষত লক্ষ্যণীয় প্রত্যেক ভোটেই ক্রমশ আমাদের সমর্থন কমছে। এবং ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে খড়্গপুর পুর-এলাকায় বিজেপির ব্যাপক ভোটবৃদ্ধি হয়েছে। ২০১১ সালের বিধানসভার তুলনায় ২৭.৭১ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। মেদিনীপুর পুর-এলাকায় ২০১১ সালের বিধানসভার তুলনায় ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ২০.৬৪ শতাংশ ভোট বৃদ্ধি পেয়েছে।’ এই পরিস্থিতিতে শহর এলাকায় জনসমর্থন পেতে দলের কর্মীদের সংগঠিত এবং পরিকল্পিত ভাবে কার্যক্রম নেওয়ারই পরামর্শ দিয়েছে জেলা সিপিএম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement