তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির টেন্ডার ঘিরে অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুললেন দলেরই একাংশ। মঙ্গলবার ডেবরা পঞ্চায়েত সমিতির এই অভিযোগের ভিত্তিতে খড়্গপুরের মহকুমাশাসক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সোমবার ওই পঞ্চায়েত সমিতির উন্নয়নমূলক কাজের দরপত্র জমা করতে না পারায় মহকুমাশাসকের কাছে পাঁচজন ঠিকাদার লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। অভিযোগকারীর মধ্যে রয়েছেন ডেবরা ব্লকের প্রাক্তন যুব তৃণমূল সভাপতি অনিরুদ্ধ দেববর্মণও। ঘটনার জেরে ফের সামনে এসেছে শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দলের ছবি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ডেবরার পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে ২৫টি উন্নয়নমূলক কাজে দরপত্র ডাকা হয়েছিল। সেই দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল সোমবার। কিন্তু দরপত্র জমা দিতে গিয়ে অনেকেই পঞ্চায়েত সমিতির অফিস থেকে ফিরে এসেছেন বলে অভিযোগ। বাসুদেব বিশই নামে এক ঠিকাদার বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতিরই কয়েকজন আমাকে সেখান থেকে চলে যেতে বলে। আমি বেরোতে না চাইলে মারধরের হুমকি দিয়ে ঠেলে বের করে দেয়।” টেন্ডার জমার বিধি মানা হয়নি বলেও অনেকেরই অভিযোগ।
কেন নিয়ম মানা হয়নি?
ডেবরার তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির ‘সিন্ডিকেটরাজ’ এই ঘটনার জন্য দায়ী। তাঁদের অভিযোগ, ২৫টি কাজের জন্য আগে থেকেই নির্দিষ্ট ২৫জন ব্যক্তিই ওই দরপত্রের আবেদন জমা দেন। তাই অন্যদের ওই দরপত্রে যোগ দিতে দেওয়া হয়নি। এলাকার ঠিকাদার গোবিন্দ বর্মন, অনিরুদ্ধ দেববর্মণ, মৌসম আলি খান-সহ পাঁচজন শেষদিনেও সুযোগ হারিয়ে মহকুমাশাসকের দ্বারস্থ হন। যদিও এই বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি যুব তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অনিরুদ্ধ। তবে তাঁর জমা দেওয়া অভিযোগে বিড়ম্বনা বেড়েছে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি থেকে সদস্য-সকলেরই।
তবে পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্যরা টেন্ডার নিয়ে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। উল্টে তাঁদের পাল্টা অভিযোগ অনিরুদ্ধরই দিকেই। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের মুনমুন সেন মণ্ডল বলেন, “যিনি অভিযোগ করছেন তিনি হতে পারে আমাদের দলের লোক। কিন্তু সে নিজেই আমাদের বহু টেন্ডারে বরাত নিয়ে ওয়ার্ক ওর্ডার পেয়ে এখনও কাজ শুরুই করেনি।” মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তবে সেখানে সিন্ডিকেটের উল্লেখ নেই। ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।” আজ, বুধবার মহকুমাশাসকের দফতরের আধিকারিকেরা ডেবরায় তদন্তে যাবেন বলে জানা গিয়েছে।