ঝাড়গ্রাম আদালতে অশোক শর্মা।
ঝাড়গ্রামের তরুণ ব্যবসায়ী সৌরভ অগ্রবাল ওরফে রকি খুনের অন্যতম অভিযুক্ত পুনম শর্মার জামিন মঞ্জুর করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে হাইকোর্ট জামিন মঞ্জুর করলেও ঝাড়গ্রামের কোনও স্থানীয় জামিনদার না মেলায় এখনও জেল হেফাজতেই রয়েছেন পুনম। সোমবার ঝাড়গ্রামের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে রকি-মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হওয়ার কথা ছিল। ভারপ্রাপ্ত সরকারি কৌঁসুলি প্রবীর পাল বলেন, “এ দিন পুনমের স্বামী তথা মূল অভিযুক্ত অশোক শর্মা আদালতে দেরিতে হাজির হওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা যায় নি। মঙ্গলবার থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।”
আদালত সূত্রের খবর, পুনমের জামিন সংক্রান্ত হাইকোর্টের নির্দেশের প্রতিলিপি ঝাড়গ্রাম প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে এসে পৌঁছেছে। পুনম অবশ্য এ দিন ঝাড়গ্রাম আদালতে হাজির হন নি। ভারপ্রাপ্ত সরকারি কৌঁসুলি প্রবীর পাল জানান, মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন পুনম। গত ১৯ মার্চ হাইকোর্টের দুই বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায় ও ইন্দ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ পুনমের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। হাইকোর্টের নির্দেশ মতো ঝাড়গ্রাম আদালতে পুনমের তরফে স্থানীয় কোনও জামিনদারকে দশ হাজার টাকার জামিননামা দাখিল করতে হবে। তবেই তিনি ছাড়া পাবেন। এ দিন পুনমের পক্ষে কোনও জামিনদার আদালতে জামিননামা দাখিল করেননি।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রকি খুনের অভিযুক্তদের তরফে মামলা লড়ার জন্য সরকারি খরচে আইনজীবী নিয়োগ করেছিল ঝাড়গ্রামের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত। ২৩ মার্চ, সোমবার থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। এ দিন সকাল সাড়ে দশটায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সময় মতো এসে পৌঁছতে পারেন নি মূল অভিযুক্ত অশোক শর্মা। তবে বাকি তিন জেলবন্দি অভিযুক্ত অশোকের দুই আত্মীয় সুমিত শর্মা ও দীনেশ শর্মা এবং অশোকের পরিচারক টোটন রানা আদালতে যথাসময়ে হাজির হন। এই তিন জন ঝাড়গ্রাম উপ সংশোধনাগারে বন্দি রয়েছেন। অশোক কলকাতার প্রেসিডেন্সি সেন্ট্রাল জেলে বন্দি রয়েছেন। এ দিন প্রথমে প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষের তরফে আদালতকে এক বার্তায় জানানো হয় অশোক অসুস্থ। পরে অবশ্য বেলা বারোটায় আদালতে হাজির হন অশোক। এ দিন বিচারককে করজোড়ে অশোক জানান, রামনবমী উপলক্ষে তিনি ৯ দিন উপবাস-ব্রত পালন করছেন। সেই কারণে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ২৯ মার্চ পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হোক। ঝাড়গ্রামের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক বিভাসরঞ্জন দে অবশ্য জানিয়ে দেন, কোনও অবস্থাতেই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ আর পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। বিচারক অশোককে জানান, মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে। আজ, মঙ্গলবার ২৪ মার্চ থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।