চিহ্নিত অংশে নেই তারিখ।—নিজস্ব চিত্র।
রেশনে দেওয়া আটার প্যাকেটে প্রস্তুতিকরণের তারিখ লেখা নেই এমনই অভিযোগ উঠল জঙ্গলমহলে।
গত শুক্র, শনি ও রবিবার ঝাড়গ্রাম মহকুমা এলাকার বিভিন্ন রেশন দোকানে আটার প্যাকেট বিলির পরেই বিষয়টি নজরে আসে। প্রস্তুতিকরণের তারিখ লেখা না থাকায় কবে এই আটা প্যাকেটে ভরা হয়েছে, তা বোধগম্য হচ্ছে না সংশ্লিষ্ট রেশন গ্রাহক ও ডিলারদের। অথচ প্রতিটি প্যাকেটে প্রস্তুতিকরণের সাল-তারিখ লেখা বাধ্যতামূলক। প্যাকে টের গায়েও লেখা রয়েছে, প্রস্তুতিকরণের এক মাস পর্যন্ত এই আটা ব্যবহার করা যাবে। ফলে, এই আটা ব্যবহার করা কতটা নিরাপদ সেই প্রশ্নও উঠেছে। তৃণমূল প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গ এমআর ডিলার জাতীয়তাবাদী সংগঠনের রাজ্য সভাপতি কাঞ্চন খান বলেন, “বেশ কিছু আটার প্যাকেটে প্রস্তুতিকরণের সাল-তারিখের উল্লেখ নেই। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েছি।” এ জন্য খাদ্য দফতরের এক শ্রেণির আধিকারিকের গাফিলতিকেই দুষেছেন কাঞ্চনবাবু। তাঁর দাবি, “মুখ্যমন্ত্রী জঙ্গলমহলের প্রতিটি মানুষের কাছে খাদ্য পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু এমন ঘটনায় আমাদেরই অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে।”
রেশন ডিলারদের অরাজনৈতিক ব্যবসায়িক সংগঠন—‘ওয়েস্টবেঙ্গল এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক ফজলু আলম বলেন, “রেশনে ভিটামিন যুক্ত আটা দেওয়ার নাম করে নিম্নমানের ও কম ওজনের আটার প্যাকেট সরবরাহ করা হচ্ছে। এবার প্রস্তুতির তারিখ ছাড়া এই আটা খেয়ে কেউ অসুস্থ হলে গ্রাহকেরা তো রেশন ডিলারদেরই দোষারোপ করবেন। বহুবার খাদ্য দফতরে অভিযোগ জানিয়েছি। ব্যবস্থা না নিলে সরবরাহকারী সংস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।” জেলা খাদ্য নিয়ামক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখে সরবরাহকারী সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।”
ঝাড়গ্রাম জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তাপস মাহাতোর নেতৃত্বে দলীয় কর্মীরা মহকুমা খাদ্য দফতরে গিয়ে আটার প্যাকেটের নমুনা জমা দেন। তাপসবাবুর অভিযোগ, “জঙ্গলমহলের গরিব মানুষদের কাছে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী নানা উদ্যোগের কথা বলেন। বাস্তবে আটার এই প্যাকেট দেখে প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়েই তো প্রশ্ন উঠছে।” ঝাড়গ্রাম মহকুমা খাদ্য নিয়ামক তরুণকুমার মণ্ডল বলেন, “ওই আটার নমুনা কলকাতায় কোয়ালিটি কন্ট্রোল টেস্টে পাঠানো হবে। কেন এমন হল খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”