ঘাটালে পঞ্চপল্লি দুর্গোৎসব কমিটির খুঁটিপুজো। নিজস্ব চিত্র
মেদিনীপুর ও ঘাটাল: কোথাও কাঠামো পুজো, কোথাও খুঁটি পুজো, কোথাও আবার প্রতিমা কিংবা মণ্ডপ শিল্পীকে বায়না দেওয়া— রথযাত্রার দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি। এবার অবশ্য সেই চেনা ছবিটা একটু অন্যরকম!
মঙ্গলবার, রথের দিনের সকাল থেকে বিকেল— অনেকটা সময়ই শহরের আকাশের মুখ ভার ছিল। কয়েক পশলা বৃষ্টিও হয়েছে। ফলে মুখ ভার ছিল পুজো উদ্যোক্তাদেরও! খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মেদিনীপুরের বেশিরভাগ পুজোর উদ্যোক্তারাই পুজোর প্রস্তুতি শুরু করতে পারেননি। কবে প্রস্তুতি শুরু করবেন, তাও ঠিক করে উঠতে পারেননি তাঁরা! শহরের এক সর্বজনীন পুজোর উদ্যোক্তা বলছিলেন, ‘‘পুজো নিয়ে এখনও কিছুই ঠিক হয়নি। পরের মাসে মিটিং ডাকা হতে পারে। এই সময় জাঁকজমক করে পুজোর আয়োজন অসম্ভব। হয়তো নমো নমো করে সবকিছু সারতে হবে।’’
শহরের বড় বাজেটের পুজোগুলির মধ্যে রাঙামাটি সর্বজনীন অন্যতম। পুজোর প্রস্তুতি নিয়ে দিনতিনেক আগে বৈঠকে বসেছিলেন এখানকার উদ্যোক্তারা। অন্যতম উদ্যোক্তা সুশান্ত ঘোষ বলছিলেন, ‘‘এ বার পুজোর বাজেট যে কমছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে বিধি মেনেই পুজো হবে।।’’ খুঁটিপুজো কবে হবে? সুশান্ত বলেন, ‘‘খুঁটিপুজো কবে হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। একটা ভাল দিন দেখে খুঁটিপুজো করা হবে।’’ সার্বিক পরিস্থিতিতে মন খারাপ মৃৎশিল্পীদেরও। অনেকেরই এখনও বায়না আসেনি। শহরের মৃৎশিল্পী আশিস দে বলছিলেন, ‘‘প্রতি বছর রথের আগেই পুজোর প্রতিমার বায়না আসে। এ বার এখনও পর্যন্ত একটাও বায়না আসেনি।’’ গতবার রথের আগেই চারটি প্রতিমার বায়না পেয়েছিলেন আশিস। এক পুজো উদ্যোক্তা বলছিলেন, ‘‘রথযাত্রা একটা উৎসব। প্রতি বছর এই দিনে রথের উৎসবের সঙ্গে যুক্ত হয় আরও একটা উৎসবে মেতে ওঠার পরিকল্পনা।’’ খোঁজ নিয়ে জানা যাচ্ছে, শহরের কোনও দুর্গাপুজো বন্ধ হবে না। তবে প্রায় সব পুজোরই জাঁক কমবে।
তবে রীতি মেনে কেউ কেউ অবশ্য রথযাত্রার দিনে কাঠামো পুজো করেছেন। যেমন, শহরের গোলকুয়াচক সৃষ্টি সর্বজনীনের কাঠামো পুজো হয়েছে এদিন। খুঁটি পুজো করেছে ঘাটালের কুশপাতা পঞ্চপল্লি দুর্গোৎসব কমিটিও। মঙ্গলবার কুশপাতা কমিটির নিজস্ব মণ্ডপে খুঁটি পুজো হয়। সামাজিক দূরত্ব মেনেই খুঁটি পুজো শেষ করা হয়। তবে এবার করোনা আবহে পঞ্চপল্লী উৎসব কমিটি প্রতিমা তৈরি করে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে মণ্ডপের জৌলুস নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।