প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্রীয় সরকারের করোনা তালিকায় 'রেড জোন’-এ রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। অর্থাৎ সংক্রমণের নিরিখে পরিস্থিতি বিপজ্জনক। সে দিক থেকে লকডাউনে কোনও ছাড়ই কার্যকর হওয়ার কথা নয় এই জেলায়।
তবে গত বেশ কয়েক দিনে নতুন করে কেউ করোনা আক্রান্ত না হওয়ায় ‘অরেঞ্জ জোন’-এর দিকে এগোচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর। এখানকার করোনা মোকাবিলার প্রশংসা করেছেন খোদ মুখ্যন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র প্রতিনিধি এসেও পরিস্থিতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এই অবস্থায় সরকারি দফতর, একশো দিনের কাজ-সহ জরুরি পরিষেবার বাইরেও বেশ কিছু কাজ এ দিন থেকে জেলায় শুরু হয়েছে।
শিল্পশহর হলদিয়া-সহ সুতাহাটা, তমলুক, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক ও এগরা— করোনা সংক্রমিত এই সব এলাকা ছাড়া গোটা জেলাতেই শর্তসাপেক্ষে একশো দিনের কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ট্রেজারি) শেখর সেন বলেন, ‘‘করোনা সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের যে সব স্বাস্থ্যবিধি রয়েছে, সব কিছুই অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে বলা হয়েছে। তবে করোনা সংক্রমণ ঘটেনি এমন এলাকাতেই একশো দিনের কাজের প্রকল্প শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্লকগুলিকে।’’ সেই মতো এ দিন ভগবানপুর-১ ব্লকে একশো দিনের প্রকল্পে পুকুর খনন শুরু হয়েছে।
সোমবার জেলা পরিষদ, জেলাশাসকের দফতর-সহ সব সরকারি অফিস এবং ব্যাঙ্ক পরিষেবাও শুরু হয়েছেল। প্রতিটি ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় সরকারের সুপারিশ মেনে ২৫ শতাংশ কর্মীর হাজিরা রেখে বিভিন্ন দফতরে কাজ হয়েছে। মানা হয়েছে স্বাস্থ্য বিধি। তমলুকে জেলা পরিষদ অফিসে ঢোকার মুখে কর্মচারী এবং আধিকারিকদের জীবাণুমুক্ত করা হয়। অফিসের ভিতরে আড্ডা নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি শুধুমাত্র সভাধিপতির নির্দেশক্রমে আপাতত কর্মচারীদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশ মতো শিল্পশহর হলদিয়া-সহ সুতাহাটা, তমলুক, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক, এগরা বাদে সব জায়গাতেই লকডাউনের মধ্যেও একশো দিনের কাজ এখন করা যেতে পারে। তবে শুধুমাত্র পুকুর এবং খাল খনন ও সংস্কার, জল সংরক্ষণ, নার্সারি পালন, জমি ভরাট প্রভৃতি কাজ অত্যন্ত কম সংখ্যক শ্রমিক নিয়োগ করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে, মাস্ক পরে শ্রমিকেরা কাজ করছেন কিনা, সে দিকে কড়া নজর রাখবে প্রশাসন।
এ দিকে, কাঁথি শহর-সহ গোটা মহকুমা এলাকা এখনও করোনা মুক্ত। এলাকায় কোনও করোনা সংক্রমণের খবর না থাকায় প্রশাসনও খানিকটা স্বস্তিতে। এই পরিস্থিতিতে কাঁথির বেশ কিছু কাজু কারখানায় কাজুবাদাম শুকিয়ে কাজ শুরু হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এ ছাড়া সব ব্যাঙ্ক, মহকুমাশাসকের দফতর, পুরসভা-সহ সব সরকারি অফিস এ দিন খুলেছে। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পকে লকডাউনের বাইরে রাখা হবে বলে আগেই জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তারপর ধীরে ধীরে কাঁথির কাজু কারখানাগুলিতে কাজ শুরু হয়েছে বলে কারখানা মালিকেরা জানান। এ প্রসঙ্গে কাঁথির মহকুমাশাসক শুভময় ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘কয়েকজন কাজু কারখানার মালিক কারখানা চালুর জন্য প্রশাসনের সম্মতি পেয়েছেন। আরও কয়েকজন কারখানা চালুর আবেদন জানিয়েছেন।’’