থানার সামনে পরিযায়ী শ্রমিকেরা। নিজস্ব চিত্র
নির্মাণ কাজের ঠিকা শ্রমিক হিসেবে কাঁথির মারিশদা এলাকায় কাজ করতে এসেছিলেন বর্ধমান শহরের আট বাসিন্দা। লকডাউনে আটকে পড়েছিলেন। শেষে হেঁটে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন ওই আটজন। সেই মতো হাঁটাও শুরু করেছিলেন। পথে পুলিশ তাঁদের আটকে নিয়ে গেল ত্রাণ শিবিরে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই আট শ্রমিক মারিশদার কালীনগর থেকে হেঁটে বর্ধমানের উদ্দেশে রওনা হন। নন্দকুমারের কাছে সন্ধ্যায় দিঘা-নন্দকুমার ১১৬বি জাতীয় সড়ক ধরে যাওয়ার সময় টহলরত পুলিশের নজরে আসে বিষয়টি। জিজ্ঞাসাবাদে করে পুলিশ জানতে পারে, ওই আট শ্রমিক হেঁটে বাড়ি যাচ্ছেন। এর পরেই ওই আট জনকে নন্দকুমার থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে খাওয়ানোর ব্যবস্থার পরে ব্লক প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তাঁদের শারীরিক পরীক্ষা হয়। শেষে নন্দকুমার কলেজের কাছে একটি সরকারি ত্রাণ শিবিরে আট শ্রমিকে রাখা হয়।
এক শ্রমিক রবি পড়িয়াল জানান, কালীনগরে অস্থায়ী ঘরের মধ্যে থাকাছিলেন তাঁরা। কিন্তু কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উপার্জন বন্ধ হয়। জমানো টাকাও প্রায় শেষ হয়ে আসছিল। তাঁরা ভেবেছিলেন, ১৪ এপ্রিল লকডাউন শেষের পরে বাড়ি ফিরে যাবেন। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় লকডাউন শুরু হতেই তাঁরা হেঁটে বর্ধমানে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। রবি বলেন, ‘‘ঠিকা শ্রমিক হিসেবে এখানে ঢালাইয়ের কাজে এসেছিলাম। জমানো টাকাও ফুরিয়ে আসছিল। বাড়ি ফিরতে না পারায় পরিবারের লোকজন খুবই চিন্তায় রয়েছেন। তাই সকলে মিলে দুপুরে হাঁটতে শুরু করেছিলাম।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, শ্রমিকদের প্রত্যেকের কাছেই ব্যাগ থাকতে দেখে সন্দেহ হয়েছিল তাদের। জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, কালীনগর থেকে বর্ধমানে যাচ্ছেন শ্রমিকেরা। একে লকডাউনের নিয়ম অনুযায়ী এখন এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাওয়া বন্ধ রয়েছে। তার উপরে কয়েকশো কিলোমিটার পথ এভাবে হেঁটে গেলে বিপদের আশঙ্কাও রয়েছে। তাই ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের থানায় আনা হয়েছিল। তাঁদের শারীরিক পরীক্ষায় কোনও অসুস্থতা ধরা পড়েনি বলে জানিয়েছেন নন্দকুমারের বিডিও মহম্মদ আবু তায়েব। বিডিও বলেন, ‘‘ওই শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁদের কারও শারীরিক অসুস্থতা ধরা পড়েনি। আটজনই সরকারি ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন। ওঁদের বাড়ি ফেরার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’