বন দফতরের রূপনারায়ণ ডিভিশনে চলছে বন্যপ্রাণী সমীক্ষা। —নিজস্ব চিত্র।
বন্যপ্রাণীর খোঁজ পেতে সমীক্ষা বন দফতরের।
হাতি ছাড়া আর কী কী বন্যপ্রাণী কোথায় কত রয়েছে তা জানতে তিনদিন ধরে সমীক্ষা চালাল বন দফতরের রূপনারায়ণ ডিভিশন। জানা গিয়েছে, ওই ডিভিশনের অন্তর্গত ৫টি রেঞ্জের ১২টি বিটের জঙ্গল ও তার আশেপাশের মৌজায় ১৭-১৯ অক্টোবর পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ের সমীক্ষা হয়। সমীক্ষার রিপোর্ট চূড়ান্ত হলে হায়না, নেকড়ে, বন্য শেয়ালের মতো প্রাণী আছে কি না, থাকলে তার সংখ্যা কোথায় কত আছে তা জানা যাবে।
হাতি ছাড়া অন্যান্য বন্যপ্রাণী সমীক্ষার কাজ বন দফতরের উদ্যোগে দক্ষিণবঙ্গে এই প্রথম হচ্ছে বলে খবর। হাতি গণনার কাজ প্রায় প্রতি বছরই করতে হয় বন দফতরকে। কিন্তু জঙ্গল ও তার আশেপাশের এলাকায় হায়না, নেকড়ে, সজারু, বনরুই আছে কি না, থাকলে কোথায় কোথায় আছে, বনবিড়াল, শেয়াল, শূকরের সংখ্যাই বা কত— এসব তথ্য কার্যত অজানাই ছিল বন দফতরের কাছে। এবার তারই তথ্য জোগাড় করছে দক্ষিণবঙ্গের বন দফতরের একাধিক ডিভিশন। রূপনারায়ণ ডিভিশনের ডিএফও মনীশ যাদব বলেন, "বন্যপ্রাণী সমীক্ষার কাজ তিনদিন ধরে চলেছে। বন দফতরের কর্মী ও একটি সংস্থার সদস্যদের ১৪টি ছোট ছোট দলে ভাগ করে এই সমীক্ষার কাজ করা হচ্ছে। প্রতিটি রেঞ্জের জঙ্গল ও তার আশেপাশের মৌজায় গিয়ে হাতি ছাড়া অন্যান্য কোনও বন্যপ্রাণী আছে কি না তার তথ্য নেওয়া হয়েছে।"
জানা গিয়েছে, সমীক্ষকেরা বন্যপ্রাণীর পায়ের ছাপ, তাদের মলমূত্রের নমুনা খুঁজে খুঁজে ছবি তুলে রাখছেন। নমুনা সংগ্রহ করছেন। তথ্য খাতায় লিখে রাখছেন। পায়ের ছাপের আকার-আয়তন স্কেল দিয়ে মেপে নেওয়া হচ্ছে। সমীক্ষক দলের সদস্য গোয়ালতোড়ের বন দফতরের এক কর্মী বলেন, "হরিণ, বন শুয়োর, শেয়াল থাকার প্রমাণ পেয়েছি। এছাড়া কিছু কিছু পায়ের ছাপ, মল-মূত্রের নমুনা পাওয়া গিয়েছে। তা কোন বন্যপ্রাণীর তা সেইসব নমুনা পরীক্ষা না করে বলা যাবে না।" এক বনকর্তা বলেন, "মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রাম বনাঞ্চলে এমন অনেক বন্যপ্রাণী আছে যারা লাজুক প্রকৃতির। অনেকে আবার লুপ্তপ্রায়। এই সমীক্ষায় সেইসব প্রাণীদের অবস্থান জানা যাবে।"
রূপনারায়ণের ডিএফও নিজে কয়েকটি এলাকায় সমীক্ষার কাজে অংশ নেন। তিনি বলেন, "হাতি ছাড়া অন্যান্য অনেক বন্যপ্রাণী থাকার প্রমাণ পাচ্ছি। সমীক্ষার রিপোর্ট চূড়ান্ত হলে কোথায় কি আছে তা জানা যাবে।"