প্রতীকী ছবি।
ভারী বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। বিস্তীর্ণ এলাকা সপ্তাহ খানেক ধরে ডুবে ছিল। ওই সব এলাকার নলকূপ-কুয়ো-পুকুরও ছিল জলের নীচে। ফলে, সেখানকার জলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু এলাকায় জলবাহিত রোগ ছড়াতে শুরুও করেছে। পরিস্থিতি দেখে বিভিন্ন এলাকায় জল শোধনের কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে কয়েক হাজার নলকূপের জল শোধন করা হয়েছে। জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতি বলেন, “যে সব এলাকা জলমগ্ন হয়েছিল, সেখানকার নলকূপ- কুয়ো-পুকুরে সংক্রমণ রোধে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। চিন্তার কিছু নেই। সার্বিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে।’’
ঘাটাল মহকুমা-সহ জেলার যে সব এলাকা জলমগ্ন হয়েছিল, সেখানে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকেও লিফলেট বিলি করা হচ্ছে। মানুষকে জানানো হচ্ছে, জল দূষণের ফলে বিভিন্ন সংক্রামক রোগ এড়াতে কী কী করা উচিত। টিউবওয়েল বা পুকুরের জল ফুটিয়ে ব্যবহার করা, জলে হ্যালোজেন বড়ি বা ক্লোরিন মেশানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার বক্তব্য, “এই সময় জলে ব্যাপক দূষণের ফলে বিভিন্ন সংক্রামক রোগ দেখা দিতে পারে। এ নিয়ে একটা আশঙ্কা থাকেই। আমরাও মানুষকে সচেতন করছি।’’
সপ্তাহ খানেক আগে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিশেষ করে ঘাটাল, চন্দ্রকোনা- ১, ২, দাসপুর- ১, ২, কেশপুর প্রভৃতি ব্লকে দুর্যোগের ব্যাপক প্রভাব পড়ে। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। সাধারণত, বন্যার পরে জল নামতে শুরু করলেই বিভিন্ন এলাকায় জলবাহিত রোগ ছড়াতে শুরু করে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানালেন, সাধারণত ১০০ মিলিলিটার জলে কোলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা যদি ১০ বা তার বেশি হয়, তবে সেই জল পান করার অনুপযুক্ত। কিন্তু বানভাসি এলাকায় বাধ্য হয়েই মানুষ সেই দূষিত জল পান করেন। আর সেই অপরিস্রুত জল থেকে ডায়েরিয়া, টাইফয়েড, জ্বর-সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়ার মতো রোগে অনেকে আক্রান্ত হন। বছর দুয়েক আগে টানা বৃষ্টিতে জেলার বিভিন্ন এলাকা যখন জলমগ্ন হয়েছিল, তখন প্রায় ৪ হাজার মানুষ সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হন। প্রায় হাজার জন জ্বরের কবলে পড়েন, প্রায় ১৫০ জন টাইফয়েডে আক্রান্ত হন। এ বার পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগাম তৎপর
হয়েছে প্রশাসন। শুরু হয়েছে জল শোধনের কাজ।a