প্রতীকী ছবি।
দুর্যোগের পরে কেটে কয়েক দিন। জলস্তর কমেছে কাঁসাই নদীতে। তবে তা নামেনি বিপদ সূীমার নীচে। এর মধ্যেই গত রবিবার রাতে ফের ময়না ও পাঁশকুড়ায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, রবিবার রাতে ময়না এবং পাঁশকুড়া ব্লক এলাকায় ৬২ মিলিমটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে ময়না ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় জল জমে মাছ চাষের ভেড়ি ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন মাছ চাষিরা।
সেচ দফতর সূত্রে খবর, কয়েকদিন আগে চণ্ডীয়া ও কাঁসাই নদীর জলস্তর যখন বেড়েছিল, তখন নদী থেকে খাল দিয়ে জল ঢোকা বন্ধ করতে ময়নার বিভিন্ন লকগেটগুলি বন্ধ করা হয়। এতে এলাকার গ্রামগুলিতে নিকাশির কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আবহাওয়া দফতর থেকে জানানো হয়েছে আজ, মঙ্গলবার থেকে জেলায় তিন দিন অতিভারী থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা রয়েছে। ফলে নিকাশির দিয়ে জল বেরোতে না পেরে জমা জলে ভেড়ি ভাসার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এক মাছ চাষির কথায়, ‘‘ভেড়ির জল উপচে গিয়ে সেখানের মাছ বাইরে চলে যাবে। এতে ক্ষতি হবে আমাদের।’’ উল্লেখ্য, ময়নায় শতাধিক ভেড়ি রয়েছে। ময়না মডেলে মাছ চাষ রাজ্যে জনপ্রিয়।
ময়না পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুব্রত মালাকার বলেন, ‘‘কাঁসাই নদীর জলস্তর কিছুটা নামলেও রবিবার রাতে ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে বিভিন্ন গ্রামের মাঠে জল জমে সমস্যা হচ্ছে। এর ফলে ব্লকের কয়েক’শ মাছ চাষের ভেড়িগুলিতে জলের পরিমাণ অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। ভেড়ি ও বসবাসের এলাকাগুলিতে বৃষ্টির জল বার করা জন্য বিকল্প ব্যবস্থার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
আরও হলে বৃষ্টি হলে নদী বাঁধগুলির পরিস্থিতি যাতে খারাপ না হয়, সে জন্য নজরদারিও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। সেচ দফতরের পূর্ব মেদিনীপুর বিভাগের নির্বাহী বাস্তুকার অনির্বাণ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কাঁসাই এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। চণ্ডীইয়ার জলসস্তর একই রকম রয়েছে। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আগের মতই রয়েছে। চণ্ডীয়া নদীর বাঁধ মেরামতির কাজ জোর গতিতে চলছে। ফের ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় নদীবাঁধগুলির দিকে বাড়তি নজর রাখা হচ্ছে।’’
এ দিকে, কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বেশ কয়েকটি গ্রাম। প্রশাসনের ভগবানপুর-১ ব্লকের কুলটিকরি এলাকার বাসিন্দা মাটির বস্তা ফেলে বাঁধ মেরামতি শুরু করেছেন। বাড়তি সতর্কতায় রাতে নদী বাঁধ পাহারা দিচ্ছেন গ্রামের যুবকেরা।
গুড়গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই গ্রামে দুই শতাধিক পরিবার বাস করে। শুক্রবার গ্রামের একাধিক ঘরবাড়িতে জল ঢুকে যায়। অভিযোগ, গত দু’তিন দিন ধরে প্রশাসন বাঁধ মেরমত করতে এগিয়ে আসেনি। এ দিন তাই স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের সহযোগিতায় পলিথিন বস্তায় মাটি ভরে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। গুড়গ্রাম বাজার থেকে বুড়াবুড়ি মৌজা পর্যন্ত নদী বাঁধ রাতে পাহারাও দেওয়া হচ্ছে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে ভগবানপুর-১ এর বিডিও পঙ্কজ কোনার ব্লক, ‘‘ব্লক প্রশাসনের তরফে বস্তা সহ অন্য সামগ্রী দিয়ে বাঁধ মেরামতিতে সাহায্য করা হয়ে। এখানে কী হয়েছে, সে বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে।’’