জামিন পেয়ে আপ্তসহায়ক তুরান মুন্সির সঙ্গে পরীমনি। ছবি: তুরান মুন্সি (বাংলাদেশ)।
ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ তাঁর বিরুদ্ধে হামলা ও প্রাণনাশের হুমকির মামলা দায়ের করেছিলেন। রবিবার ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। সোমবার আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাতকে সঙ্গে নিয়ে আইনি প্রক্রিয়া মেনে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন পরীমনি। তার পরেই আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেন দুই বাংলার জনপ্রিয় নায়িকা। জানান, একের পর এক ঘটনায় মানসিক চাপ তৈরি হয়েছিল। তাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। জামিন পাওয়ার পর অনেকটাই স্বস্তিতে। পাশাপাশি আক্ষেপও করেন, “আমরা তো মানুষের জন্য, দেশের জন্য কাজ করি। তা হলে কেন এত বাধা আসবে? আমার এটুকুই প্রশ্ন ছিল।”
শনিবার টাঙ্গাইলের একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল অভিনেত্রীর। বাংলাদেশের জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের টাঙ্গাইল এবং কালিহাতী শাখার আপত্তির কারণে তিনি যেতে পারেননি বলে খবর। এর পরেই পরীমনি সমাজমাধ্যমে একটি বার্তা ভাগ করে নেন। লেখেন, “এত চুপ করে থাকা যায় নাকি! পরাধীন মনে হচ্ছে। শিল্পীদের এত বাধা কেন আসবে? নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি!” প্রশ্ন তোলেন, কেন স্বাধীন দেশে নিরাপদ নন দেশবাসী? উদাহরণ হিসেবে দেশের খ্যাতনামী মেহজাবীন, পড়শীর নাম উল্লেখ করেন। জানান, তাঁরাও এর আগে হেনস্থার শিকার হয়েছেন! পরের দিনই তাঁর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি! ও পার বাংলার অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, সমাজমাধ্যমে প্রতিবাদ জানানোর ফলেই কি তড়িঘড়ি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি?
একই প্রশ্ন পরীমনির কাছে রেখেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। তাঁর কথায়, “বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আর কিছু বলতে চাই না। তবে কিছুটা আঁচ তো করাই যায়।” জামিনমুক্ত অভিনেত্রী নিশ্চয়ই আগের মতো আবার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন? আশা করা যায়, কাজের ক্ষেত্রে এর কোনও প্রভাব পড়বে না? খুশি গলায় দুই বাংলার নায়িকার দাবি, একেবারেই না। তিনি এ-ও বলেন, “কোনও গোষ্ঠী যদি বাধা তৈরি করে তা হলে বলার কিছু নেই। আমি তখনও আবার বলব। কী করব বলুন, কোনও কালেই অন্যায় দেখে চুপ থাকিনি। আগামীতেও থাকব না। আমার গায়ে লাগলে কাউকে ছেড়ে কথা বলব না। বাকিদের মতো চুপ করে থাকতে পারি না।”
এর আগে অভিনেত্রী একাধিক বার স্বীকার করেছেন, তিনি একটু বেশিই স্পর্শকাতর। যে কোনও বিষয় তাঁকে একটু বেশি ছুঁয়ে যায়। এই অনুভূতি থেকেই পরীমনির উপলব্ধি, “কথা বলার জন্য যদি আমার মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়, কিছু হলেই জেলে পাঠানোর হুমকি দেওয়া হয়— সেটা খুবই দুঃখজনক। স্বাধীন দেশে এই ধরনের আচরণ মানা যায় না।” নিজের দেশের কাছে তাঁর অনুরোধ, স্বাধীন দেশের নাগরিকদের যেন বাক্স্বাধীনতা থাকে।