বীরসিংহ গ্রাম ও তার আশেপাশের এলাকা আলোকিত করতে একগুচ্ছ পথবাতি বসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। ফাইল চিত্র।
সাধারণ মানুষের মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে সচেষ্ট ছিলেন বিদ্যাসাগর। যদিও তাঁর জন্মস্থান ঘাটালের বীরসিংহেই বিদ্যুতের আলো এতদিন তেমন উজ্জ্বল ছিল না! বিদ্যাসাগরের জন্মের দ্বিশতবর্ষে অবশ্য সেই আঁধার ঘুচতে চলেছে। পুরো বীরসিংহ গ্রাম ও তার আশেপাশের এলাকা আলোকিত করতে একগুচ্ছ পথবাতি বসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর।
জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘বীরসিংহে আরও আলোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ওখানে কিছু পথবাতি বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। কাজ শুরু হয়েছে।’’ জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, আপাতত এখানে দু’টি হাইমাস্ট (উঁচু বাতিস্তম্ভ) বসছে। দু’টি হাইমাস্টের মধ্যে একটি বসছে স্থানীয় স্কুলের অদূরে। আরেকটি বসছে স্থানীয় স্মৃতি মন্দিরের অদূরে। প্রথম পর্যায়ে অন্তত ২২টি পথবাতি বসবে। পরবর্তী সময়ে বীরসিংহ ও তার আশেপাশের এলাকা জুড়ে আরও ৬৬৫টি পথবাতি বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। রাস্তার একপাশে ৭-৮ মিটার অন্তর পথবাতিগুলি বসানো হতে পারে। স্তম্ভের পাঁচ মিটার উঁচুতে আলো থাকবে।
প্রশাসনের এক সূত্রের অনুমান, পথবাতি বসানোর পুরো পরিকল্পনা রূপায়ণ করতে অন্তত দেড় কোটি টাকা খরচ হতে পারে। ওই সূত্রে খবর, পরিবহণ দফতরকে এই খরচ জোগানোর অনুরোধ করা হতে পারে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘টাকার সংস্থান ঠিক হয়ে যাবে। প্রয়োজনে সাংসদ, বিধায়ক বা অন্য সরকারি প্রকল্প থেকে এই খাতে টাকার আবেদন করা হতে পারে।’’
গত কয়েক বছরে ঘাটালের বীরসিংহে নানা উন্নয়নমূলক কাজ হলেও এলাকা আলোকিত করার দিকে তেমন নজর দেওয়া হয়নি বলে স্থানীয়দের একাংশের দাবি। তেমন পথবাতি এখানে নেই। তাই সন্ধ্যা নামলে গোটা এলাকা প্রায় অন্ধকারে ডুবে যায়। মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটে। মহিলাদের অনেকে একা রাস্তায় বেরোতে সাহস করেন না। বীরসিংহের এক বাসিন্দার ক্ষোভ, ‘‘শহরগুলিতে কত আলো জ্বলে। শুধু আমাদের এখানেই এত অন্ধকার!’’ বীরসিংহকে আরও আলোকিত করার দাবি আগেও উঠেছিল। অবশ্য গত কয়েক বছরে এ নিয়ে তেমন কোনও উচ্চবাচ্য হয়নি জেলার প্রশাসনিক স্তরে।
আগামী মঙ্গলবার বীরসিংহে আসার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই সফরকে সামনে রেখে বীরসিংহকে সাজিয়ে তুলতে নানা পরিকল্পনা করেছে জেলা প্রশাসন। এরমধ্যে পথবাতির ওই পরিকল্পনা রয়েছে। জেলা প্রশাসনের আশা, এলাকা আলোকিত হলে বীরসিংহের সৌন্দর্যায়নও হবে। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘এটা ভাল উদ্যোগ। পর্যাপ্ত পথবাতির ব্যবস্থা করা গেলে বীরসিংহে নিশ্চিতভাবে আঁধার ঘুচবে!’’