প্রতীকী ছবি।
বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বিডিও বদল। আর তা নিয়ে শুরু রাজনৈতিক তরজা।
একটানা পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজ্যের এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির স্বীকৃতিপ্রাপ্ত রামনগর-১ ব্লকে এমন ঘটনায় শোরগোল পড়েছে রাজনৈতিক মহলে। বিজেপি’র অভিযোগ, তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির ‘অনৈতিক’ কাজে বাধা দেওয়ায় বিডিও’কে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শাসকদলের অবশ্য দাবি, সরকারি বিধি মেনেই বিডিও’কে বদলি করা হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, দিঘায় শিল্প ও বাণিজ্য সম্মেলন শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগেই রামনগর-১ ব্লকের তৎকালীন বিডিও আশিস রায়কে বদলি করার নির্দেশ এসে গিয়েছিল। গত ৬ ডিসেম্বর নবান্ন থেকে এ ব্যাপারে একটি নির্দেশিকা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের কাছে পৌঁছয়। কিন্তু দিঘায় শিল্প সম্মেলন প্রক্রিয়ায় প্রশাসনিক আধিকারিকেরা ব্যস্ত থাকার কারণে আশিসের বদলি সাময়িক স্থগিত ছিল।
সম্মেলন শেষ হওয়ার পরে গত সোমবার মুর্শিদাবাদের লালবাগ মহকুমার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদে বদলি হয়ে যান আশিস। তাঁর পরিবর্তে তমলুকে জেলাশাসকের দফতরে প্রবেশনারি অফিসারের দায়িত্বে থাকা বিষ্ণুপদ রায় রামনগর-১ এর বিডিও হিসাবে যোগ দিয়েছেন। মঙ্গলবার পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে তাঁকে সংবর্ধনা জানানো হয়।
এ দিকে, ওই বদলি নিয়ে প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছড়িয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, গত বছর সেপ্টেম্বরে আশিস রায় রামনগর-১ এর বিডিও পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। এক বছরের সামান্য কিছুদিন সময়ব্যাপী কার্যকালে তিনি এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজের জন্য এলাকাবাসীর প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। কিন্তু এহেন ‘সফল’ বিডিও কে আচমকা কেন বদলি করা হল, সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। অভিযোগ উঠেছে, শাসকদল তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির সঙ্গে নানা উন্নয়নমূলক কাজকর্ম নিয়ে বিডিও’র মতাপার্থক্য তৈরি হয়েছিল। বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি (কাঁথি) তপন মাইতি বলেন, ‘‘দিঘাতে পর্যটন শিল্পের নামে বহু অনিয়ম হচ্ছে। জি-প্লাস ফোর ভবন তৈরির অনুমোদন দিতে রাজি হচ্ছিলেন না ওই বিডিও। তাই তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি ওই আধিকারিকের উপর চাপ সৃষ্টি করছিল। তারপরই তাঁকে এখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হল।’’
যদিও জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এটি রুটিন বদলি।’’ আর বিজেপি’র অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি করেছেন তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী শম্পা পাত্র। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি বিধি মেনেই প্রাক্তন বিডিওর পদোন্নতি করেছেন। বরাবর পঞ্চায়েত সমিতি এবং বিডিও যৌথভাবেই উন্নয়নের কাজ করে। বদলি নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে।’’