স্টেশনে দেদার বিকোচ্ছে খোলা খাবার। নিজস্ব চিত্র
ট্রেন প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ালেই দরজায় হাজির ট্রলি। ট্রলিতে সাজানো লুচি, তরকারি, আলুর দম। খিদের মুখে তা খেয়েও নিচ্ছেন অনেকে। তবে নিয়মিত নজরদারি দূরে থাক, খাবারে ঢাকা দেওয়ারও বালাই নেই। আঢাকা খাবারে অনবরত পড়ছে ধুলো, আর সেই খাবারই যাত্রীরা খেলেও উদাসীন রেল কর্তৃপক্ষ।
কোনও ছোট স্টেশন নয়, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এ-ওয়ান খড়্গপুর স্টেশনেই নজরদারির এমন হাঁড়ির হাল। স্টেশনে গেলেই চোখে পড়বে, ট্রলি করে খাবার নিয়ে হচ্ছে এক প্ল্যাটফর্ম থেকে অন্য প্ল্যাটফর্মে। নিয়মিত খাবারের গুণগত মান খতিয়ে দেখা হয় না বলেও অভিযোগ। রেলের দাবি, এক ভেন্ডর মামলা করায় তার অধীনস্থ হকারেরা প্ল্যাটফর্মে এ ভাবে খাবার বিক্রি করছে।
খড়্গপুর স্টেশনে ট্রলিতে খাবার বিক্রি করছিলেন হকার শিবানন্দ সাউ। খাবার ঢেকে বিক্রি করছেন না কেন? তাঁর দাবি, “অধিকাংশ সময় আমরা খাবার ঢেকেই রাখি। কিন্তু যাত্রীরা যাতে খাবারগুলো দেখতে পান, সে জন্য অনেক সময় খাবার খুলে রাখা হয়। আমরা আর এ ভাবে খাবার বিক্রি করব না।”
রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, ২০০১ সালে খড়্গপুর স্টেশনে ভেন্ডর হিসেবে কাজের বরাত পায় এক ঠিকাদার সংস্থা। সাধারণত রেলের নিয়মে ৫ বছরের মেয়াদে বরাত দেওয়া হয়। সেই সময় থেকেই একে-একে ১৪ জন হকার ওই ভেন্ডরের অধীনে স্টেশনে ট্রলিতে খাদ্য সামগ্রী বিক্রি করছে।
বছর কয়েক আগে রেল জানতে পারে, ওই ভেন্ডরের কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। অথচ ওই ঠিকাদার সংস্থা দাবি করে, তাঁর কাজের বরাতের মেয়াদ এখনও রয়েছে। ওই ঠিকাদার সংস্থা মামলা
করে। সেই মামলার নিষ্পত্তি
এখনও হয়নি।
যাত্রীদের অবশ্য অভিযোগ, মামলা করলেও চুক্তি অনুযায়ী রেল কর্তৃপক্ষের নিয়ম মানতে বাধ্য ওই ভেন্ডর। কিন্তু সেই নিয়ম অনুযায়ী রেলের নজরদারিতে ফাঁক থেকেই যাচ্ছে। সরব হয়েছে খোদ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের যাত্রী সুরক্ষা কমিটি।
চুক্তি ভঙ্গ হওয়ায় কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না রেল? খড়্গপুরে রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার কুলদীপ তিওয়ারি বলেন, “এই ভেন্ডর মামলার নিষ্পত্তিও হয়নি। কিন্তু যাত্রী স্বার্থ বিঘ্নিত হওয়ায় আমরা জরিমানা করেছি। রান্নাঘরও বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা আবারও বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেব।”