প্রতীকী ছবি।
বিডিও-কে হেনস্থার অভিযোগে গোপীবল্লভপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির দুই মহিলা কর্মাধ্যক্ষকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতেরা হলেন মধুমিতা দেহুরি ও শেফালি বাশুরি। মধুমিতা বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ-কর্মাধ্যক্ষ। শেফালি হলেন জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ।
বুধবার মধুমিতাকে কুড়চিমঠ গ্রামে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এদিনই বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে ওড়িশার বোম্বাই চটি থানার পড়াশিয়া গ্রাম থেকে শেফালিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঝাড়গ্রাম জেলার পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দু’জনকে আজ, বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হবে। মধুমিতা গোপীবল্লভপুরের আলমপুর অঞ্চলের পঞ্চায়েত সমিতির আসন থেকে নির্বাচিত। অন্যদিকে, শেফালি সাতমা অঞ্চলের পঞ্চায়েত সমিতির আসন থেকে নির্বাচিত। তাঁর বাড়ি কেন্দুয়াবান্ধি গ্রামে।
সোমবার গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের জঙ্গলমহল উৎসবে বিজেপি জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে অভিযোগ। ওই দিন পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী দাঙ্গি সরেনের নেতৃত্বে বিজেপি-র জনপ্রতিনিধিরা বিডিও-র অফিস চেম্বারে ঢুকে তাঁকে কলার ধরে চেয়ার থেকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। আক্রান্ত হন তাঁর নিরাপত্তারক্ষীও। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। ওইদিন বিকেলে ধামসা বাজিয়ে জঙ্গলমহল উৎসবের উদ্বোধন করেন দাঙ্গি। সন্ধ্যায় দাঙ্গি সহ বিজেপি-র ৯ জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে গোপীবল্লভপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বিডিও দেবজ্যোতি পাত্র। ৯ অভিযুক্তের মধ্যে পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী দাঙ্গি সরেন ও জেলা পরিষদ সদস্য দুলালী দাস সহ ৮ জন মহিলা জনপ্রতিনিধি রয়েছেন। আর এক অভিযুক্ত হলেন জেলা পরিষদের বিজেপি সদস্য তুহিনশুভ্র সিংহ।
বিডিও-র অভিযোগের ভিত্তিতে কর্তব্যরত সরকারি আধিকারিককে মারধর ও কাজে বাধাদান (জামিনঅযোগ্য), গালিগালাজ-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, বিডিও-র অফিস ঘরের সিসিটিভি-র ফুটেজ খতিয়ে দেখার পরে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোপীবল্লভপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির মোট সদস্য সংখ্যা ১৮ জন। এর মধ্যে ১২ জন বিজেপি-র সদস্য। তৃণমূলের ৫ জন। একজন সিপিএমের সদস্য।
বিজেপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক অবনী ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূলের উদ্দেশ্য বিজেপি-র পঞ্চায়েত সমিতিকে ভেঙে দেওয়া। ৪ জানুয়ারি গোপীবল্লভপুরে দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে পথে নেমে আন্দোলন শুরু হবে।’’ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শঙ্করপ্রসাদ হাঁসদা বলেন, ‘‘বিজেপি-র জনপ্রতিনিধিরা ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছেন। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে আমরা মিছিল-পথসভা করেছি। আইন আইনের পথে চলবে।’’