Nandigram

ফের তুহিনের হাতেই নন্দীগ্রাম, সরব বিজেপি

প্রতিবারের মতো এবারও লোকসভা ভোটে নজরে থাকবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা এলাকা নন্দীগ্রাম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:৩৮
Share:

—প্রতীকী ছবি।

লোকসভা ভোটের আগে সদ্য জেলা পুলিশে রদবদল হয়েছে। তাতে জেলার একাধিক পুলিশ কর্মীর কেউ সমান্তরাল পদে, আবার কেউ পদোন্নতি পেয়ে বদলি হয়েছেন। এই বদলের তালিকায় নাম রয়েছে তুহিন বিশ্বাসের। তাঁকে জেলা পুলিশের ডিএসপি (সদর) করা হয়েছে। তাঁর আওতাতেই রয়েছে নন্দীগ্রাম থানা। জেলা রাজনীতিতে জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘর এই নন্দীগ্রামের তুহিনের আওতায় থাকা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন। তাদের অভিযোগ, তুহিন রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল ঘেঁষা এবং তিনি শাসকদলের থেকে প্রভাবিতও হন। যদিও জেলা পুলিশের দাবি, এই বদলির সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই।

Advertisement

প্রতিবারের মতো এবারও লোকসভা ভোটে নজরে থাকবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা এলাকা নন্দীগ্রাম। জেলার দু’টি লোকসভা কেন্দ্র— তমলুক এবং কাঁথি বিজেপির দখলে রাখতে দৃঢ়প্রতজ্ঞ শুভেন্দু। তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে থাকা নন্দীগ্রামের উপরে তাই সব রাজনৈতিক দলেরই নজর থাকবে। কিন্তু সেখানের থানা তুহিনের আওতায় থাকায় প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। কীভাবে এই এলাকার দায়িত্বে ঘুরে ফিরে সেই তুহিনই আসছেন, তা জানতে চাইছে তারা।

নন্দীগ্রাম থানা সূত্রের খবর, আইসি থানা হওয়ার পর ২০২১ সালে জুনে নন্দীগ্রাম থানার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তুহিন বিশ্বাস। ২০২২ সালে মার্চে তাঁর হাওড়া জিআরপিতে বদলি হয়। ২০২৩ সালের অগস্টে ফের নন্দীগ্রাম থানার আইসির দায়িত্বভার পান। ২০২৩ নভেম্বরে পদোন্নতি হয়ে তুহিন ডিএসপি হন। তবে সে সময় তাঁকে পোস্টিং দেওয়া হয়। এর পরে গত ১৫ জানুয়ারির রদবদলে তুহিনকে জেলা পুলিশের ডিএসপি (সদর) করা হয়েছে। ঘটনাচক্রে তাঁর দায়িত্বে রয়েছে যে দুটি থানা, তার একটি হল নন্দীগ্রাম।

এই বদলিতে প্রশ্ন বিজেপির। তাদের দাবি, লোকসভা ভোটের আগে ঘুরপথে তুহিনের হাতে এভাবে নন্দীগ্রাম দিয়ে রাজনৈতিক ‘চক্রান্ত’ করা হচ্ছে। বিজেপির বক্তব্য, তৃণমূলের অত্যন্ত আস্থাভাজন পুলিশ অফিসারদের অন্যতম তুহিন বিশ্বাস। রাজনৈতিক ময়দানে নন্দীগ্রামে বিপন্ন তৃণমূল শিবির। সেখানে তৃণমূল পুলিশের মাধ্যমে বিরোধীদের মিথ্যা মামলা দেওয়ার কাজ করতে পারে বলে দাবি। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক মেঘনাদ পাল বলেন, ‘‘তৃণমূলের প্রদীপ জ্বালানোর লোক নেই নন্দীগ্রামে। তুহিন বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরেই ভোট পার করতে চাইছে তৃণমূল। এই তুহিনই এক সময় বিজেপি কর্মীদের মিথ্যা মামলায় জড়ানো এবং গ্রেফতার করতেন। তাই ফের থাকে নন্দীগ্রাম থানায় দায়িত্ব দিয়ে পুরস্কৃত করা হল।’’ বিজেপি মনে কারাচ্ছে, দলীয় কর্মীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদে গত ২০ ডিসেম্বর সোনাচূড়ায় বন্‌ধের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। ওই ঘটনায় নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ৩৫ জন বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে ১০টি ধারাতে মামলা করেছিল।

Advertisement

এই বিতর্কে অবশ্য মাথাব্যথা নেই তৃণমূলের। তৃণমূলের নন্দীগ্রাম-১ ব্লক সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ বলেন, ‘‘প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই। পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল ১০ হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছে বিজেপির থেকে। ভোটের ফল কী হবে, তা বুঝতে পেরে বিজেপি নিজেদের পক্ষে যুক্তি সাজাচ্ছে।’’

জেলা পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্যকে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে জেলা পুলিশের একটি সূত্রের খবর, এই বদলি রুটিনমাফিক হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement