প্রতীকী ছবি।
সদ্য পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সভাপতির পদে তাঁকে বসানো হয়েছে। তারপর থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সাংগঠিক বৈঠক করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। তবে গত কয়েকমাসে কার্যত ‘ব্রাত্য’ ছিল তাঁর ঘরের মাঠ পাশকুড়া। সভাপতি হওয়ার পরে বৃহস্পতিবার প্রথমবারের জন্য সৌমেন পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভার দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করলেন। সেখানে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে এলাকার রণনীতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এদিন পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া একটি প্রেক্ষাগৃহে তৃণমূলের পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভার সাংগঠনিক বৈঠকটি হয়েছে। সেখানে সৌমেন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দীপ্তি জানা, ব্লকের মহিলা সভানেত্রী কবিতা ঘড়া, পাঁশকুড়া পুরসভার পুরপ্রধান নন্দকুমার মিশ্র-সহ অধিকাংশ ব্লক ও শহর নেতৃত্ব। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নিহত তৃনমূল নেতা কুরবান শা’র স্ত্রী তথা মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সাবানা খাতুনও। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে বুথ স্তর পর্যন্ত সংগঠনকে চাঙ্গা করবার পরামর্শ দেন দলের জেলা সভাপতি।
অধিকারী পর্বে কার্যত নিজের জেলা থেকে দূরে থাকতে হয়েছে সৌমনকে। গত কয়েক বছরে তাঁর রাজনীতির বিচরণ ক্ষেত্র ছিল পশ্চিম মেদিনীপুর। তবে শুভেন্দু অধিকারীর দলবদল এবং তাঁর পরিবারের ক্ষমতা খর্ব পর্বে ফের পূর্বের রাজনীতিতে ফিরেছেন সৌমেন। তবে এর মধ্যেই তাঁর বাসস্থান পাঁশকুড়া এবং সংলগ্ন এলাকায় বিরোধী শক্তি হিসাবে জোরদার হয়েছে বিজেপি। ঘাটাল লোকসভার কেন্দ্রের অন্তর্গত পাঁশকুড়া শহরে গত লোকসভা ভোটে বিজেপি তেমন দাঁত ফোটাতে না পারলেও গ্রামীণ এলাকায় তারা তৃণমূলকে জোরদার টক্কর দিয়েছে। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ঘাটাল লোকসভার অধীন পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভায় শাসকদল তৃনমূলকে প্রায় তিন হাজার ভোটে পেছনে ফেলে দেয় বিজেপি।
এদিকে, পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভার মধ্যে অনেকটা জুড়েই রয়েছে এই গ্রামীণ এলাকা। ফলে দলের দায়িত্ব পাওয়ার পরে নিজের এলাকা গোছাতে উদ্যোগী হয়েছেন সৌমেন। আর এ দিনের এই সাংগঠনিক বৈঠক পাঁশকুড়া শহর-সহ গ্রামীণ এলাকায় নিজেদের হারানো জমি ফিরে পাওয়ার প্রথম পদক্ষেপ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
উল্লেখ্য, সৌমেন জেলা সভাপতি হওয়ার কিছুদিন আগে তাঁর স্ত্রী তথা পাঁশকুড়া পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুমনা মহাপাত্রকে পাঁশকুড়া শহর তৃণমূলের সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেছে তৃণমূল। জেলার নয়া কমিটিতে পাঁশকুড়া শহর থেকে তিনজন এবং ব্লক এলাকা থেকে দু’জন নেতাকে দলের সাধারণ সম্পাদক করেছেন সৌমেন। নিজের এলাকায় ভাল করতে যে তিনি সচেষ্ট, তা স্বীকার করছেন মন্ত্রী। এ দিন সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল আমাদের একটা শিক্ষা দিয়েছে। তবে আমি খুবই আশাবাদী ২০১৯-র পুনরাবৃত্তি ২০২১-এ হবে না। ২০২১ সালে এখানে জয়ের ব্যবধান ২০১৬কে-ও ছাড়িয়ে যাবে।’’