শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
জঙ্গলমহল পুনরুদ্ধারে শুভেন্দু অধিকারীই যে তাঁর ভরসা, তা ফের স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কলকাতায় তৃণমূল ভবনে ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়ার নেতার সঙ্গে দলীয় বৈঠকে নেত্রীর স্পষ্ট বার্তা, প্রতিটি বিষয়ে শুভেন্দুর সঙ্গে আলোচনা করেই পদক্ষেপ করতে হবে। শুভেন্দুও নেত্রীকে জানান, ঝাড়গ্রাম পুনরুদ্ধার হয়ে যাবে। ঝাড়গ্রামের ক্ষেত্রে প্রাক্তন সাংসদ উমা সরেনকে জেলায় দলের বর্তমান সভানেত্রী বিরবাহা সরেনের সঙ্গে কাজ করার নির্দেশও দিয়েছেন মমতা।
লোকসভার আগে ঝাড়গ্রামের দায়িত্ব ছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘাড়ে। তবে ভোটে গোটা জঙ্গলমহলের সঙ্গে ঝাড়গ্রামও হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। তারপরই জেলা নিয়ে এ দিন ছিল পর্যালোচনা বৈঠক। জঙ্গলমহলের দায়িত্ব অবশ্য শুভেন্দুকে আগেই সঁপেছিলেন মমতা। সেই মতো জেলায় আসাও শুরু করেছেন শুভেন্দু। এ দিন দুপুর দু’টো থেকে ঘন্টা দু’য়েকের বৈঠকে মমতা ফের বুঝিয়ে দেন, ঝাড়গ্রাম জেলায় শুভেন্দুই যে তাঁর ‘সেকেন্ড-ইন কমান্ড’। শুভেন্দুর উপস্থিতিতেই মমতা দলের জেলা নেতাদের জানিয়ে দেন, আগামী ৮ জুলাই শুভেন্দু ঝাড়গ্রামে জনসংযোগ যাত্রা করবেন, শহরের রবীন্দ্রপার্কে সভাও হবে।
দহিজুড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান ফাল্গুনী দে এ দিন বৈঠকে জানান, ক’দিন আগে তাঁর বাড়িতে কাটমানি ফেরতে চেয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। তবে তিনি এ সবের কিছুই জানেন না। মিথ্যা অভিযোগে বিক্ষোভ হলে প্রতিবাদ করার নিদান দেন মমতা।
এ দিন জনসংযোগেও জোর দিয়েছেন মমতা। বৈঠকে উপস্থিত ঝাড়গ্রামের এক নেতা বলেন, ‘‘আমরা ভেবেছিলাম দিদি খারাপ ফলের জন্য বকাঝকা করবেন। উনি সে সব কিছুই করেননি। উল্টে বলেছেন, ভেঙে পড়ার কিছু নেই। মানুষের কাছে যেতে হবে। সবাইকে নিয়ে চলতে হবে।’’ কিষান খেত মজুর সংগঠনের এক নেতা জেলা নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে গেলে তাঁকে থামিয়ে দেন মমতা। যাবতীয় অভিযোগ পর্যবেক্ষক শুভেন্দুর কাছে লিখিত ভাবে জানাতে বলেন। আর এক নেতা জানান, নেত্রী বলেছেন, ‘যা সমস্যা, অসুবিধে আছে পর্যবেক্ষককে লিখিত দাও।’
দল সূত্রে খবর, বৈঠকে জেলা সভানেত্রী বিরবাহাকে মমতা নির্দেশ দেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গড়ে দেওয়া কোর কমিটিকে নিয়েই সাংগঠনিক কাজ করতে হবে। কমিটিতে কাউকে নিতে হলে বা বাদ দিতে হলে শুভেন্দুর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মমতার আরও নির্দেশ, যাঁরা বিজেপিতে গিয়েছে, তাদের আর দলে ফেরানো হবে না। বিরবাহাকে দলীয় কাজে সাহায্যের জন্য ঝাড়গ্রামের প্রাক্তন সাংসদ উমাসরেনকে নির্দেশ দেন মমতা। উমা জেলা কোর কমিটিতে আছেন কি-না জানতে চান নেত্রী। বিরবাহা সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে মমতা বিরবাহাকে জানিয়ে দেন, উমা কোর কমিটিতে না থাকলে তাঁকে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে জেলার সব স্তরের নেতা-জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে নেত্রীর নির্দেশ, ‘‘বিরবাহা সরেনকে সভাপতি মেনে নিয়ে সব কাজ করতে হবে। কারণ ও ভাল মেয়ে।’’