মেদিনীপুর সদরের লোহাটিকরিতে তৃণমূলের প্রস্তুতি । নিজস্ব চিত্র
পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম— দুই জেলাতেই তৃণমূলের পঞ্চায়েতের প্রার্থী তালিকা এখনও আলাদা করে ঘোষণা করা হয়নি। তবে সূত্রের খবর, রবিবার মেদিনীপুর ও ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার প্রায় প্রতিটি ব্লকেই বৈঠক করে অঞ্চল কমিটির হাতে প্রার্থী তালিকা তুলে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কয়েকটি ক্ষেত্রে অবশ্য ঐক্যমতে পৌঁছনো যায়নি। সোমবার তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে দুই জেলায় অনেকে মনোনয়ন জমাও দিয়েছেন।
সোমবার মেদিনীপুর (সদর) ব্লক অফিসে চত্বরে দেখা যায় তৃণমূলের কিছু কর্মীকে। যাঁরা দাবি করেছেন, দল তাঁদের প্রার্থী করছে তাই মনোনয়ন জমা দিতে এসেছেন তাঁরা। তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা অবশ্য বলছেন, "দলের প্রার্থী তালিকা এখনও ঘোষণা হয়নি। স্থানীয়স্তরে কেউ কেউ নিজেকে দলের প্রার্থী হিসেবে দাবি করে মনোনয়ন করে থাকতে পারেন। তবে দলের প্রতীক কে পাবেন, সেটা দল ঠিক করবেন।"
তৃণমূল সূত্রে খবর, আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না হলেও পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে কারা দলের প্রার্থী হবেন মেদিনীপুরে, সেটা মোটের উপর ঠিক হয়ে গিয়েছে। চাঁদড়া, কনকাবতী এলাকাতেও তৃণমূলের কয়েকজন এদিন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি গৌতম দত্ত মানছেন, "দলের কয়েকজন এদিন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।" খড়্গপুর মহকুমার কয়েকটি ব্লকেও মনোনয়ন দিতে শুরু করেছেন তৃণমূলের লোকজন।
ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সবং, পিংলা ব্লকে অবশ্য সোমবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে একটিও মনোনয়নপত্র জমা পড়েনি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার ডেবরা ব্লকে অঞ্চল কমিটির হাতে প্রার্থী তালিকাও তুলে দিতে পারেননি নেতৃত্ব। ডেবরা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায় বলেন, "ভবানীপুরের মতো কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রার্থী নিয়ে সামান্য কিছু সমস্যা ছিল। তা নিয়ে বৈঠক করে ইতিমধ্যেই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেগুলি প্রার্থী বাছাইয়ের ভোটের ফলের সঙ্গে মেলানো হবে। তার পরে আইপ্যাক আমাদের নাম দিলে সেটা অঞ্চলকে দেওয়া হবে।"
ঘাটাল মহকুমাতেও প্রার্থী তালিকা ঠিক করতে দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, এ বার ঘাটাল সাংগঠনিক জেলায় একাধিক প্রাক্তন বিধায়ক জেলা পরিষদের আসনে টিকিট পাবেন। তবে প্রার্থী তালিকা নিয়ে কোন্দল কমেনি এখানে। রবিবার ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি ব্লককে নিয়ে বৈঠক বসেছিলেন নেতৃত্বরা। দাসপুরের গৌরায় সেই বৈঠকে মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, জেলা কো অর্ডিনেটর অজিত মাইতিরা ছিলেন। সেখানে ঘাটাল এবং দাসপুর ১ ও ২ ব্লক নিয়ে আলোচনা হয়। মন কষাকষি থাকলেও সিদ্ধান্ত ফলপ্রসূ হয় বলে খবর। চন্দ্রকোনা-১ ও ২ ব্লক নিয়ে গোলমাল চরমে ওঠায় ফের সোমবার দু’টি ব্লককে নিয়ে বৈঠক করেন মানস, অজিতরা।
ঝাড়গ্রাম জেলাতেও অনেক ব্লকেই তৃণমূলের তরফ থেকে মনোনয়ন জমা পড়েছে। গোপীবল্লভপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি হেমন্ত ঘোষ বলেন, ‘‘এদিন গ্রাম পঞ্চায়েতে ৬৫ জন ও পঞ্চায়েত সমিতিতে ৭ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। দলীয় ভাবে তালিকা ঘোষণা হয়নি। ব্লক থেকে উচ্চ নেতৃত্বকে যেভাবে নামের তালিকা দিয়েছি, সেই অনুয়ায়ী মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে।’’ তালিকায় রদবদল ঘটলে কি হবে? হেমন্ত জানান, তখন নতুন করে মনোনয়ন জমা দিতে হবে।