কবিতা ঘোষ ( ডান দিকে) ও সুখি সরেন। নিজস্ব চিত্র।
পুরপ্রধান ও উপ-পুরপ্রধান— অরণ্যশহরে পুরসভার শীর্ষ দুই পদে দুই মহিলাকে বেছে নিল তৃণমূল। সপ্তম ঝাড়গ্রাম পুরবোর্ডের পুরপ্রধান হচ্ছেন কবিতা ঘোষ। উপ পুরপ্রধান হচ্ছেন ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত ‘নতুন মুখ’ সুখি সরেন।
কবিতার পুরসভা চালানোর অভিজ্ঞতা মাত্র ছ’মাসের। স্বল্প সময়ের কাজেই স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রাক্তন শিক্ষিকা কবিতা পারদর্শিতা দেখিয়েছিলেন বলে সওয়াল করেছিলেন তৃণমূলের একাংশ। সোমবার বিকেলে ঝাড়গ্রামে দলীয় বৈঠকে ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত সেই কবিতার নামই পুরপ্রধান হিসেবে ঘোষণা করেন জেলা তৃণমূল সভাপতি দেবনাথ হাঁসদা।
২০১৩ সালে ৯ নম্বর থেকে জিতে পাঁচ বছর কাউন্সিলর ছিলেন কবিতা। গত বছর অগস্টে সরকার মনোনীত পুর-প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারপার্সন হন তিনি। তাঁর ছ’মাসের কার্যকালে শহরের তালতলা শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লি চালু হয়। উড়ালপুলের সার্ভিস রাস্তা তৈরির জট কাটাতেও উদ্যোগী হন কবিতা। সূত্রের খবর, পুরপ্রধান পদের দৌড়ে একাধিক নাম থাকলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ পর্যন্ত কবিতার নামেই সিলমোহর দেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, উপ-পুরপ্রধান পদেরও একাধিক দাবিদার ছিল। তবে ভারসাম্যের রাজনীতির অঙ্কে আদিবাসী মুখ সুখিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। কবিতা বলছেন, ‘‘নেত্রী ভরসা করে গুরুদায়িত্ব দিয়েছেন। শহরবাসীর স্বার্থে তা যথাযথ পালনের আপ্রাণ চেষ্টা করব।’’ রাস্তার উন্নতি ও উড়ালপুলের সার্ভিস রাস্তা তৈরির মতো বিষয়গুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এ দিন শহরে নিজের দলীয় কার্যালয়ে বিজয়ী তৃণমূল প্রার্থীদের ডেকেছিলেন দেবনাথ। তবে নতুন ১৬ জন কাউন্সিলরের মধ্যে এসেছিলেন ১৩ জন। গরহাজির ছিলেন ৩ নম্বরের কাউন্সিলর প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান শিউলি সিংহ, ৭ নম্বরের গোবিন্দ সোমানি ও ৯ নম্বরের প্রশান্ত রায়। ছিলেন জেলা তৃণমূলের চেয়ারপার্সন বিরবাহা সরেন টুডু, জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী নিয়তি মাহাতো, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস, গোপীবল্লভপুরের বিধায়ক খগেন্দ্রনাথ মাহাতো। প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদাকে বৈঠকে ডাকা হলেও বিধানসভায় থাকায় তিনি আসতে পারেননি। দেবনাথ জানান, ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকায় কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত তিন জন বৈঠকে আসেননি।
সূত্রের খবর, পুলিশ-প্রশাসনের রিপোর্ট, পিকে টিমের রিপোর্ট, দলের বিভিন্ন মহলের মত যাচাই করেই দুই মহিলাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দলের রাজ্য নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত পছন্দের অজিত মাহাতো, আর্য ঘোষদের ভাগ্যেও শিকে ছেঁড়েনি। তবে সূত্রের খবর, প্রাক্তন পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেবকে ‘মেন্টর’-এর মত আলঙ্কারিক পদ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। আবার বিরবাহার স্কুল জীবনের প্রাক্তন শিক্ষিকা কবিতা পুরপ্রধান হওয়ায় জল্পনা চলছে। বিরবাহা যদিও বলেন, ‘‘কবিতাদি ভাল মানুষ। নেত্রী তাঁর নাম চূড়ান্ত করেছেন।’’