ফের তৃণমূলের দু’পক্ষের সংঘর্ষে তেতে উঠল কেশপুরের শীর্ষা। দলের অঞ্চল কার্যালয় ঘেরাও করে দীর্ঘক্ষণ চলল বিক্ষোভ। বিক্ষোভ হটাতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। যদিও পুলিশ তা মানেনি। ঘটনাটি রবিবার সকালের। দুপুরের দিকে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গোলমালে জড়িতদের খোঁজ চলছে। গোলমালের কথা মানছেন তৃণমূল নেতৃত্বও। দলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পান বলেন, ‘‘শীর্ষায় একটা গোলমাল হয়েছে। বিষয়টি দেখছি।’’
কেশপুরের এই তল্লাটে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল নতুন নয়। এক দিকে রয়েছেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি রাম সানির অনুগামীরা। অন্য দিকে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এক্রামূল হোসেনের ঘনিষ্ঠরা। গত দু’-তিন মাসে দফায় দফায় দু’পক্ষের সংঘর্ষ বেধেছে এখানে। জখম হয়েছেন অনেকে। রবিবার সকালে বাজার এলাকার চা দোকানে এসেছিলেন নিমাই রায় নামে তৃণমূলের এক কর্মী। নিমাই এক্রামূল-অনুগামী বলে পরিচিত। সম্প্রতি তিনি রাম-অনুগামীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন। কখনও গাছ কেটে পাচার, কখনও একশো দিনের কাজের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তুলেছিলেন। এ দিন সেই আক্রোশেই চা দোকান থেকে বেরোনোর সময় রাম সানি ও তাঁর দলবল নিমাইয়ের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। নিমাইকে মোটরবাইকে চাপিয়ে দলের অঞ্চল কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। খবর পেয়ে তাঁর পরিজনেরা আসেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে নিমাইকে মোহবনি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়।
মারধরের খবর জানাজানি হতেই এক্রামূল-অনুগামীরা ওই তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে দলের মহিলা কর্মী-সমর্থকেরাও ছিলেন। শীর্ষা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এক্রামূলের অভিযোগ, “দলের অঞ্চল সভাপতির নেতৃত্বেই এই হামলা হয়েছে। যে ভাবে এক নিরীহ কর্মীকে অঞ্চল কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়েছে তা এলাকাবাসী মেনে নিতে পারেননি। তাই তাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।’’
মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি রাম সানির দাবি, “নিমাই এখন বিজেপির সঙ্গ নিয়েছে। এ দিনের ঘটনার পিছনে বিজেপির মদত রয়েছে।” রামের আরও অভিযোগ, “প্রথমে ওরাই হামলা করে। অসীম ভান্ডারি সহ আমাদের দু’জনকে মারধর করা হয়।”
এ দিনের গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “কেশপুরের বিষয়টি দেখছি।’’