প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে সরব হয়ে লালগড় অঞ্চল যুব সভাপতির পদ হারিয়েছিলেন। এ বার সেই প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা সম্মতিতেই দলীয় পদে উত্তরণ হল নেতাইয়ের বাসিন্দা সরজিত রায় ওরফে জয়ের।
বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামে নেতাই দিবস উদ্যাপন সংক্রান্ত তৃণমূলের এক বৈঠকেই সরজিতকে লালগড় ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়। স্থির হয়েছে, ৭ জানুয়ারি তৃণমূলের জেলা ও ব্লক নেতৃত্বের উপস্থিতিতে নেতাই শহিদ বেদিতেই শহিদ স্মরণ সভা হবে। নেতাইয়ের অভিমান ভাঙিয়ে জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মু বলছেন, ‘‘সর্বসম্মতিক্রমে সরজিতকে ব্লক সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে নেতাই দিবস পালনের জন্য বৈঠক সফল হয়েছে। রাজ্য থেকে নেতারাও আসবেন। রাজ্যের কোন কোন নেতা আসবেন, সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’’
নেতাই দিবস পালন নিয়েই এ দিন ঝাড়গ্রাম শহরে রূপছায়া মোড়ের দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন দুলাল। ছিলেন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা, জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী নিয়তি মাহাতো, নেতাই শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটির সভাপতি নন্তু অধিকারী, কমিটির সম্পাদক সরজিত রায়, লালগড় ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তারাচাঁদ হেমব্রম, প্রাক্তন ব্লক সভাপতি শ্যামল মাহাতো প্রমুখ। ছিলেন শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটির সদস্যরাও। বৈঠকের শুরুতেই সরজিতকে দলীয় পদ থেকে সরানো নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কমিটির সদস্যরা। জয়ই দলের তরফে নেতাইয়ের যোগসূত্র ছিলেন বলে দাবি তাঁদের।
নেতাইয়ের প্রতিনিধিরা দুলালকে ক্ষোভের সুরে জানান, নেতাই মামলার সাক্ষ্যদানের দিন সিপিএমের নানা স্তরের নেতারা আদালতে হাজির থাকেন। অথচ তৃণমূলের নেতৃত্বস্থানীয় কেউ থাকেন না।
সাক্ষীদের নানা কটূক্তি ও হেনস্থার মুখেও পড়তে হয়। তাঁদের আরও ক্ষোভ, তৃণমূলের জেলা ও ব্লকস্তরের নেতারা গ্রামে বছরে একবার আসেন, বাকি সময় খোঁজ রাখেন না। সূত্রের খবর, বৈঠকে দুলাল আশ্বস্ত করেন, এরপর থেকে সাক্ষীদের সঙ্গে দলের কেউ না কেউ যাবেন। শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটির সভাপতি নন্তু অধিকারী বৈঠকে জানান, নেতাই গ্রামের জন্য মুখ্যমন্ত্রী অনেক কাজ করেছেন। তাই তৃণমূলকে সঙ্গে নিয়েই শহিদ স্মরণ হবে। এরপর দুলালই দলের লালগড় ব্লক সাধারণ সম্পাদক পদে সরজিতের নাম প্রস্তাব করেন। বিরবাহা তাতে সম্মতি দেন। সর্বসম্মতিক্রমে সরজিতের নয়া পদ ঘোষণা করা হয়।
পরে বিরবাহা বলেন, ‘‘নেতাইয়ের পাশে তৃণমূল ছিল, আছে, থাকবে। বৈঠক থেকে সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে। প্রস্তুতি দেখতে শুক্রবারই গ্রামে যাচ্ছি। আর শনিবার তো যাবই।’’ সরজিতের কথায়, ‘‘নেতাইবাসীর দাবি মেনে আমাকে দলের পদ দেওয়া হয়েছে। সবাই মিলে শহিদস্মরণ সভা করব।’’ মান-অভিমান মিটল তাহলে?
সরজিতের জবাব, ‘‘নেতাই গ্রামের কেউ সাহায্য চাইলে বিরবাহাদি করেন। আর আমি সমাজমাধ্যমে কারও নাম করে কিছু লিখিনি। আর সে সব মনেও রাখিনি।’’