তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘ওরা শাসানি দিয়ে গিয়েছে, যদি আমি তৃণমূল না ছাড়ি তা হলে আবারও আমায় ‘শিক্ষা’ দিয়ে যাবে।’’
পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে তত উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম। বুধবার গভীর রাতে নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের গোকুলনগর পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূল নেতার বাড়িতে বোমা নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। তৃণমূলের বুথ কমিটির সদস্য বুদ্ধদেব মুনিয়ানের বাড়িতে বোমাবাজির ঘটনায় ওই নেতা ও তাঁর স্ত্রী গুরুতর জখম হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বুদ্ধদেবের দাবি, তিনি আক্রমণকারীদের দু’জনকে চেনেন। তাঁরা বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পদ্ম শিবির।
বুদ্ধদেবের দাবি, বুধবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ প্রবল চিৎকারে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি দেখেন একদল দুষ্কৃতী তাঁর বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছে। বাইরে দাঁড় করানো তাঁর মোটর বাইকটি ভেঙে চুরমার করছে তারা। তিনি বাধা দিতে গেলে প্রথমে অকথ্য ভাষা আর তার পরেই তাঁর দিকে উড়ে আসে একটি বোমা। বাড়ির দরজার সামনে প্রবল বিস্ফোরণ হয়। আহত হন তিনি এবং তাঁর স্ত্রী।
বুদ্ধদেবের কথায়, ‘‘যারা হামলা চালিয়েছে, তাঁদের মধ্যে দু’জনকে আমি চিনতে পেরেছি। ওরা বিজেপি করে। আমাকে, আমার পরিবারকে গালি দিয়েছে আমি তৃণমূল করি বলে। ওরা শাসানি দিয়ে গিয়েছে, যদি আমি তৃণমূল না ছাড়ি তা হলে আবারও আমায় ‘শিক্ষা’ দিয়ে যাবে। পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমি ভীত। ইতিমধ্যে পুলিশকে সব জানিয়েছি।”
এ নিয়ে নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গের অভিযোগ, “গোকুলনগর অঞ্চলের পারুলবাড়িতে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ২৪৭ এবং ২৪৮ নম্বর বুথ কমিটির সদস্য বুদ্ধদেব মুনিয়ানের বাড়িতে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। এখন মহেশপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।’’ তৃণমূল নেতার সংযুক্তি, “এভাবে বোমাবাজি, হামলা চালিয়ে তৃণমূলকে ভয় দেখানো যাবে না।’’
অন্য দিকে, এই ঘটনার দায় নিতে অস্বীকার করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নন্দীগ্রামে প্রতিনিয়ত হামলা চালাচ্ছে তৃণমূল। বিজেপি কর্মীদের ওপর লাগাতার অত্যাচার চলছে। নন্দীগ্রামের এই বোমা হামলার নেপথ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল রয়েছে। এই ঘটনায় বিজেপি কোনও ভাবে জড়িত নয়।”
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পর থেকেই বার বার উত্তেজনা ছড়িয়েছে বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কেন্দ্র নন্দীগ্রামে। তবে বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনায় পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি বলে খবর।