গড়বেতার অবরোধস্থলে পুলিশ বাহিনী (বাঁ দিকে)। জখম বিজেপি নেতা প্রদীপ লোধা (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র
একে একে ফিরে আসছে পুরনো নাম। কেশপুরের পর ফের শিরোনামে গড়বেতার চমকাইতলা!
বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার চমকাইতলায়। বৃহস্পতিবার ভাঙচুর হল বিজেপি নেতাদের গাড়ি। হামলা চলল তৃণমূলের কার্যালয়ে। দু’দশকেরও বেশি সময় পরে চমকাইতলায় মুখোমুখি শাসক-বিরোধী।
এ দিন গড়বেতা মধ্য মণ্ডলের ধাদিকা ও পূর্ব মণ্ডলের চমকাইতলায় সদস্য সংগ্রহ অভিযান উপলক্ষে দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠক ছিল বিজেপির। ধাদিকার বৈঠক সেরে দুপুরে চমকাইতলায় জেলা ও মণ্ডল নেতৃত্বের বৈঠকে যাচ্ছিলেন বিজেপি নেতারা। অভিযোগ, যাওয়ার পথে নেতাদের গাড়ি ঘিরে হামলা হয়। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা করেছে বলে বিজেপির অভিযোগ। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাস বলেন, ‘‘চমকাইতলা পৌঁছনোর আগেই আমাদের গাড়িগুলির উপর বোমা- বন্দুক নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। মারধর করা হয় জেলা সম্পাদক মদন রুইদাস, জেলার সহ সভাপতি প্রদীপ লোধা, শেখর রায় সহ ৮-৯ জন কার্যকর্তাকে। গাড়ি -বাইক ভাঙচুর করা হয়।’’
জখম বিজেপি নেতা-কর্মীদের চিকিৎসার জন্য গড়বেতায় আনা হয়। প্রতিবাদে বিকেলে বিবেক মোড়ে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধ করেন বিজেপি কর্মীরা। ঘন্টাখানেকের অবরোধে যানজট হয় জাতীয় সড়কে। তৃণমূলের অভিযোগ, অবরোধ থেকেই উত্তেজিত বিজেপি কর্মীরা গড়বেতায় তাদের ব্লক কার্যালয়ে হামলা চালায়। ভেঙে দেওয়া হয় টেবিলের কাচ, লন্ডভন্ড করা হয় কাগজপত্র। তখন পার্টি অফিসেই ছিলেন ব্লক সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ সহ ব্লক নেতৃবৃন্দ। হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে সেবাব্রত বলেন, ‘‘চমকাইতলায় হুগলি থেকে লোক এনে অশান্তি বাঁধানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। মিথ্যে অভিযোগে আমাদের জড়িয়ে বিজেপিই আমাদের কার্যালয় ভাঙচুর করেছে।’’ তৃণমূলের অভিযোগ, ধাদিকায় তৃণমূলের দুই কর্মীকে মারধর করে বিজেপি কর্মীরা। যদিও সব অস্বীকার করেছে বিজেপি। ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার গড়বেতা থানা এলাকায় ১২ ঘন্টা বন্্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাস।
নয়ের দশকের শেষ। চমকাইতলায় এলাকা দখলের লড়াইয়ে শাসক সিপিএম ও বিরোধী তৃণমূলের সংঘর্ষ তখন প্রায় প্রতিদিনের ঘটনা। কেশপুরের পাশাপাশি চমকাইতলায় সৌজন্যে গড়বেতাও তখন শিরোনামে। মাঝে পালাবদলের পর ফের শাসকের নিরঙ্কুশ আধিপত্য ওই দুই এলাকায়। এ বার লোকসভা ভোটে কেশপুর এলাকায় তৃণমূল আধিপত্য ধরে রাখতে পারলেও গড়বেতায় এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। ইঙ্গিত ছিল ফলাফলেই। ইতিমধ্যে কেশপুরে ফিরে এসেছে যুদ্ধের আবহ। এ বার উত্তপ্ত হয়ে উঠল গড়বেতার চমকাইতলা।
এ দিকে, কাল শনিবার কেশপুরের সভার অনুমতি পুলিশ দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি। একই সঙ্গে তাদের দাবি, অনুমতি না দিলেও সভা হবেই।