হাতের ব্যথাই জোর সুভদ্রার

জন্ম থেকেই তাঁর হাত ও পায়ের আঙুলগুলি স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক ছোট। পূর্ণাঙ্গ নয় হাতের তালুর গঠনও। তবু দু’হাতের তালু দিয়েই শক্ত করে আঁকড়ে ধরেন কলম। কাগজের উপর লেখা হয় একটি জীবনের সংগ্রাম। শুধু শারীরিক সমস্যাই নয়। খুব ছোট বেলায় সুভদ্রা দেখেছেন তাঁর বাবা-মায়ের বিচ্ছেদও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৭ ০১:১২
Share:

সংগ্রাম: এ ভাবেই পরীক্ষা দেয় সুভদ্রা। নিজস্ব চিত্র

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা, মানসিক কষ্ট— কোনও কিছুই এতদিন বা‌ধা হয়ে দাঁড়ায়নি। এ বার অবশ্য খানিকটা বিপাকে গজাশিমুল গ্রামের সুভদ্রা প্রামাণিক। কারণ এখন তাঁর সামনে বাধা অর্থনৈতিক।

Advertisement

উচ্চ মাধ্যমিকে ৭১ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করেছেন গজাশিমুল কেসিএম হাইস্কুলের কলা বিভাগের ছাত্রী সুভদ্রা। জন্ম থেকেই তাঁর হাত ও পায়ের আঙুলগুলি স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক ছোট। পূর্ণাঙ্গ নয় হাতের তালুর গঠনও। তবু দু’হাতের তালু দিয়েই শক্ত করে আঁকড়ে ধরেন কলম। কাগজের উপর লেখা হয় একটি জীবনের সংগ্রাম। শুধু শারীরিক সমস্যাই নয়। খুব ছোট বেলায় সুভদ্রা দেখেছেন তাঁর বাবা-মায়ের বিচ্ছেদও। গজাশিমুলে মাসির বাড়িতে থেকেই এতদিন লড়াই করে এসেছেন তিনি। মাসি শোভারানি মান্না বলেন, ‘‘ওর কলেজের লেখাপড়া চালানোর মতো সঙ্গতি তো আমাদের নেই। তাই কী হবে জানি না।’’

সুভদ্রার মা কমলা প্রামাণিক থাকেন পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডি থানার সুইসা গ্রামে। সেখানে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর কাজ করেন। তাঁর পক্ষেও সম্ভব নয় মেয়ের উচ্চশিক্ষার ভার নেওয়া। সুভদ্রার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মিনু বেরা বলেন, ‘‘আমরা সাধ্যমতো মেয়েটিকে সাহায্য করেছি। মাধ্যমিকেও ও ৫৯ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল। কিন্তু উচ্চ শিক্ষার জন্য উপযুক্ত আর্থিক সাহায্য না পেলে সুভদ্রার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে। সহৃদয় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলে খুব ভাল হয়।’’

Advertisement

সুভদ্রা কিন্তু স্বপ্ন দেখেন ডব্লিউবিসিএস অফিসার হওয়ার। তিনি বলেন, ‘‘লিখতে গেলে আমার হাতে খুব ব্যথা হয়। কিন্তু মনের জোরে সেই যন্ত্রণা ভুলে থাকি। আমি বড় হতে চাই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement