মেদিনীপুর কলেজ-কলেজিয়েট মাঠে পরিদর্শন। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ কতজন পাচ্ছেন? কিংবা ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’? একশো দিনের কাজের পরিস্থিতিই বা কী? কিংবা ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পের কী অবস্থা?
মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকদের দিকে এই ধরনের প্রশ্নই ধেয়ে আসতে পারে। শুধু সংখ্যাতত্ত্ব নয়, যাঁরা আবেদন করেও প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন না, তাঁরা কেন পাচ্ছেন না, তার ব্যাখ্যাও দিতে হতে পারে জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকদের। সেই মতো প্রস্তুতি সেরে রাখা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, আজ, শনিবার মেদিনীপুরে এক প্রশাসনিক প্রস্তুতি বৈঠক ডেকেছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল। বিভিন্ন দফতরের জেলা আধিকারিকদের বৈঠকে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৈঠকটি হবে মেদিনীপুরে কালেক্টরেটের সভাকক্ষে। বিভিন্ন দফতরের কাজকর্মের পর্যালোচনা হবে। জানা যাচ্ছে, আধিকারিকেরা নিজ নিজ দায়িত্বে থাকা দফতরের কাজকর্মের অগ্রগতির রিপোর্ট নিয়ে বৈঠকে হাজির হবে। এই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে তাঁদের। সঙ্গে থাকবে ‘পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন’। শুক্রবার দফতরগুলি এই প্রেজেন্টেশন তৈরিতে ব্যস্ত ছিল। একটি দফতরের জেলা আধিকারিক মানছেন, ‘‘শনিবার বৈঠক রয়েছে। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন তৈরি রাখছি।’’ অন্য এক দফতরের আধিকারিকও মানছেন, ‘‘দফতরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট তৈরি রাখছি।’’
মুখ্যমন্ত্রী আসছেন। ছুটি ভুলেছে জেলা প্রশাসন। যে সব আধিকারিকেরা ছুটিতে রয়েছেন, তাঁদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানা যাচ্ছে, প্রয়োজনে রবিবার ফের প্রস্তুতি বৈঠক হতে পারে। শনিবারের বৈঠকে কোনও বিষয়ের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট না-এলে, সেই বিষয়ের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট রবিবারের বৈঠকে দিতেই হবে। শুক্রবারও বিভিন্ন প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছেন জেলাশাসক।
মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে সাফাই চলছে পর্যটন উন্নয়ন নিগমের ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি টুরিস্ট কমপ্লেক্সে। নিজস্ব চিত্র।
মেদিনীপুরে এসে দলীয় বৈঠকও করবেন মমতা। তার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার মমতা নিজেই জানিয়ে দেন, ১০ মে তিনি মেদিনীপুরে আসবেন। ওই দিন বিকেলে মেদিনীপুরে জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। ১১ মে দুপুরে মেদিনীপুরে দলীয় বৈঠক করবেন। দলের পঞ্চায়েত সদস্যরাও বৈঠকে থাকবেন। ওই দিন দুপুরেই তিনি মেদিনীপুর থেকে ঝাড়গ্রামে যাবেন। তাঁর বার্তা দলের নীচুস্তরে পৌঁছনোর জন্যই তাঁর এই দলীয় বৈঠক বলে বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা। মেদিনীপুরে দলের এই বৈঠক হবে কলেজ-কলেজিয়েট স্কুল মাঠে। প্রস্তুতি দেখার দায়িত্ব বর্তেছে পিংলার বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতির উপরে। তাঁকেই এই কর্মসূচির আহ্বায়ক করেছেন মমতা বলে দলীয় সূত্রে খবর। আজ, শনিবার মেদিনীপুরে প্রস্তুতি বৈঠক ডেকেছেন অজিতও। মেদিনীপুর এবং ঘাটাল- দুই সাংগঠনিক জেলার নেতারা বৈঠকে থাকবেন। অজিত মানছেন, ‘‘দিদি আসছেন। দলের বৈঠক করবেন। প্রস্তুতি বৈঠক আমরা শনিবার করছি।’’
তবে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকটি কোথায় হবে, সেটি শুক্রবার পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। এই বৈঠক পুলিশ লাইনের মাঠে হওয়ার কথা। তবে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বৈঠকের ছাউনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিকল্প হিসেবে তাই জেলা পরিষদ হল প্রদ্যোত স্মৃতি সদনে এই বৈঠক করা যায় কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে খবর। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শীঘ্রই বৈঠকস্থল চূড়ান্ত হবে।’’