প্রশান্ত কিশোর।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি তৃণমূলের এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান। দলের জন্মলগ্ন থেকেই তিনি তৃণমূলের সদস্য বলে দাবি ওই নেতার। তাই এমনটা মেনে নিতে পারেননি তিনি। যা নিয়ে দলে আসা নিত্যনতুন নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ রয়েছে তাঁর। তবে তিনি একা নন, রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতো পূর্ব মেদিনীপুরেও আগি ও নব্য তৃণমূলের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছেই। যার কিছুটা আঁচ ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনেও পড়েছে বলে তৃণমূলের একাংশের মত। তাই বিধানসভা নির্বাচের আগে তৃণমূলে আদি-নব্যের দূরত্ব ঘোচাতে এ বার মাঠে নামতে হলো প্রশান্ত কিশোরের টিমকে।
তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে যাঁরা ছিলেন তাঁরা এখন ব্রাত্য বলে অভিযোগ উঠেছে দলের মধ্যে। যার প্রেক্ষিতে অনেকে দলও বদলেছেন। তবে বর্তমানে সামনের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে ইতিমধ্যেই দলের পুরনো নেতা-কর্মীদের ফিরে আসার ডাক দেওয়া হয়েছে দলের তরফে। আর সেই কাজকেই ত্বরান্তিত করতে মাঠে নামানো হয়েছে পিকের টিমকে। দলীয় সূত্রে খবর, আদি তৃণমূল নেতাদের বাড়ি যাচ্ছেন ওই দলের প্রতিনিধিরা। সে ভাবেই নন্দীগ্রামের বিরুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য ও প্রধান চিত্তরঞ্জন পালের বাড়িতে রবিবার বিকেলে গিয়েছিল পিকের টিমের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। তারা ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে চিত্তরঞ্জনকে।
চিত্তরঞ্জনের ক্ষোভ, ‘‘বর্তমানে দলে পুরনো নেতাদের আর ভরসা করা হচ্ছে না। সারা জীবন কট্টর তৃণমূল পন্থী হওয়া সত্ত্বেও এখন দলে মর্যাদা মেলে না। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রাক্তন প্রধান হিসেবে আমি নিজের ভোট দিতে পারিনি। বর্তমান দলের কোনও নীতি আদর্শ নেই। করে খাওয়ার জন্যই এখনকার নেতারা দল করে। শীর্ষ নেতৃত্ব সব জেনেও নীরব। তাই ধীরে ধীরে দলের নানা কাজকর্ম থেকে নিজেকে সরিয়ে এনেছি।’’
তাঁর দাবি, ‘‘রবিবার তিন সদস্যের পিকের টিম আমার বাড়িতে এসেছিল। আমাকে দলে ফের সক্রিয় হতে বলা হয়েছে। আমি ওঁদের জানিয়েছি, দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিজেকে মানাতে পারবো না বলেই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। ওঁরা প্রায় দেড় ঘণ্টা আমার বাড়িতে ছিলেন।’’
রাজনৈতিক মহলের মতে, নন্দীগ্রামে তৃণমূলের বিভিন্ন নেতা-কর্মীরা দুর্নীতি জড়িয়েছেন। আমপানের ক্ষতিপূরণ নিয়েও অভিযোগ উঠেছে। বিধায়ক ও পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও নিজের এলাকায় দুর্নীতি আটকাতে পারেননি। যা নিয়ে দলের একাংশ ক্ষুব্ধ। বাধ্য হয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো প্রশান্ত কিশোরের টিমকে মাঠে নামিয়েছেন।
যদিও এই বিষয়ে নন্দীগ্রাম তৃণমূল বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যান মেঘনাদ পালের বক্তব্য, ‘‘বাইরে থেকে যে টিমই আসুক তারা এখানে ভোট করাবে না। ভোট করাবেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। ২০১৯ সালে রাজ্যে বিজেপি ১৮টা আসন পেলেও নন্দীগ্রামে তৃণমূল প্রায় ৭০০০০ ভোটে লিড দিয়েছে।’’