—প্রতীকী চিত্র।
পিছমোড়া করে বাঁধা হাত-পা। চলছে দমাদম মার। মারতে মারতে কেউ বলছেন, ‘‘একদম মেরে দেব।’’ মারের চোটে যন্ত্রণায় চেঁচাচ্ছেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু রেহাই নেই। মাথা ফেটে রক্ত ঝরছে। কিন্তু মার থামছে না। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের শ্রীরামপুর গ্রামের। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে এই অবস্থা হয়েছে এক শিক্ষকের। শুধু মারধরই নয়, বিবাহিত হয়ে প্রেম করার ‘অপরাধে’ সালিশি সভা ডেকে ওই শিক্ষককে আট লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। যদিও মারের চোটে অসুস্থ ওই শিক্ষক এখন কলকাতার একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের শ্রীরামপুর গ্রামের এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান কেশপুর থানার নেড়াদেউলের বাসিন্দা এক স্কুল শিক্ষক। কিন্তু কয়েক দিন আগে কলেজছাত্রীর পরিবার জানতে পারেন যে, ওই শিক্ষক বিবাহিত। তার পরেই এই কাণ্ড।
দিন কয়েক আগে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাড়ির কাছে গিয়েছিলেন ওই শিক্ষক। অভিযোগ, তাঁকে দেখা মাত্র ঘিরে ধরেন তরুণীর বাড়ির লোকজন। তার পর মোটা দড়ি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয়। সেই মারের দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন অনেকে। পরে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয় ওই ভিডিয়ো। তবে এখানেই শেষ নয়। এর পর ওই শিক্ষককে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের সালিশি সভায়। সেখানে নিদান দেওয়া হয় ৮ লক্ষ টাকা দিতে হবে ওই শিক্ষককে।
পরে অবশ্য মারে চোটে অসুস্থ ওই শিক্ষককে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ সূত্রে খবর, এখনও এ নিয়ে কেউ লিখিত অভিযোগই দায়ের করেনি। আহত শিক্ষকের পরিবারও এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েক জন জানাচ্ছেন, এই মারধরের ঘটনায় শাসকদলের কয়েক জন
নেতা এবং গ্রামের মাতব্বররা জড়িত। তাঁদের এই কাজকে কেউ সমর্থন করেননি। কিন্তু ভয়ে কেউ প্রতিবাদও করেননি।