তর্পণের ভিড়ে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই মেদিনীপুর গাঁধী ঘাটে (বাঁ দিকে)। একই ছবি ঘাটালের শিলাবতীতে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল, নিজস্ব চিত্র
পঞ্জিকা মতে পিতৃপক্ষের শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার। মহালয়ায় নিয়ম মেনে পিতৃতর্পণও হয়েছে। করোনা আবহে তর্পণের ঘাটগুলিতে ভিড় অন্য বছরের তুলনায় কম থাকলেও, নিষ্ঠায় খামতি ছিল না। কোথাও কাকভোরেই জলে ডুব, তো কোথাও পুরোহিত ডেকে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে জল নিবেদন। মহালয়ার ভোর গড়িয়ে বেলা— পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নানা প্রান্তে পুলিশের নজরদারিতেই হল পিতৃতর্পণ।
মহালয়ায় পিতৃতর্পণের প্রথা চলে আসছে আবহমান কাল ধরে। করোনা অতিমারিতেও ছেদ পড়ল না তাতে। এ দিন মেদিনীপুরের একাধিক নদীঘাটে তর্পণ হয়েছে। ভোর থেকেই ঘাটগুলিতে মানুষের আনাগোনা বাড়তে থাকে। মেদিনীপুরের গাঁধীঘাটে ভোর থেকেই তর্পণের ভিড় জমে যায়। পুরসভা এলাকার ঘাটগুলি তর্পণের জন্য সাফসুতরো করে দেওয়া হয়েছিল। বেলা বাড়ার সাথে সাথে জনসমাগম বাড়তে থাকে। মেদিনীপুরের পুর-প্রশাসক দীননারায়ণ ঘোষ বলেন, ‘‘ঘাট পরিষ্কার করা হয়েছিল, নির্বিঘ্নেই তর্পণ হয়েছে।’’ ছিল বাড়তি নজরদারি। ঘাটে ঘাটে মোতায়েন ছিল পুলিশ। মাস্ক পড়ে অনেকে তর্পণ করতে আসেন। তর্পণের ভিড়ে ছিলেন মেদিনীপুরের অরুণ সেন। তিনি বলেন, ‘‘ঘাট পরিষ্কারই ছিল, অসুবিধা হয়নি।’’
এ দিন খড়্গপুরের অনেকেও মেদিনীপুরে কাঁসাই নদীতে তর্পণ করতে আসেন। কেউ বাইকে, কেউ গাড়ি করে নদীঘাটে এসে তর্পণ করেন। খড়্গপুর মহকুমার অন্য ব্লকগুলিতে পিতৃতর্পণ হয়েছে রীতি মেনেই। প্রতিবছরের মতো এ বারও ঘাটালে শিলাবতী নদীতে পিতৃতর্পণে প্রচুর মানুষের ভিড় জমে। অনেক নদীঘাটে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। তবে করোনার জন্য বেশিরভাগকেই মাস্ক পরে দূরত্ব বজায় রেখে তর্পণ করতে দেখা গিয়েছে। রীতি মেনে তর্পণ করে ঘাট ছাড়েন অনেকে। ঘাটাল শহরের কুশপাতা, মহকুমাশাসকের কার্যালয় লাগোয়া ঘাটে ভোর চারটে থেকেই ভিড় হতে শুরু করে। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথেই ভিড় পাতলা হয়েছে।
গড়বেতা, গোয়ালতোড়ে শিলাবতীর ঘাটগুলিতে তর্পণের ভিড় তেমন ছিল না। কয়েকটি জায়গায় পুরোহিত ডেকে দলবদ্ধভাবে পিতৃতর্পণ করেন অনেকে। কিছু ঘাট ফাঁকাই ছিল। গোয়ালতোড়ে তমাল ও চন্দ্রকোনা রোডের কুবাই নদীর কিছু ঘাটে তর্পণ হয়েছে। তর্পণের রীতিনীতি মানা হলেও করোনা বিধি মানার ক্ষেত্রে শিথিলতা দেখা গিয়েছে জেলা জুড়েই।