প্রতীকী ছবি।
মহিলাকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল এক ব্যক্তির। শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (তৃতীয়) মৌ চট্টোপাধ্যায় ময়না থানার পরমানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত রায়কে এই কারাদণ্ড দেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, সুব্রতর সঙ্গে ময়নার মগরা গ্রামের রীতা বেরার বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছেলে মামাবাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত। বিয়ের প্রায় ১৫ বছর পর সুব্রত স্ত্রীর উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে বলে অভিযোগ। এনিয়ে পারিবারিক অশান্তি ছিল। ২০১৫ সালের ১৯ জুলাই রাতে সুব্রতর সঙ্গে রীতার বচসা হয়। তার জেরেই রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ সুব্রত ওরফে লালু একটি ঘরে জোর করে রীতাকে প্লাস্টিক চেয়ারের সঙ্গে পিছমোড়া করে শাড়ি দিয়ে বেঁধে দেয়। তারপর তাঁর গায়ে মদ ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। রীতাদেবী চিৎকার করলে সুব্রত বঁটি দিয়ে তাঁর গলায় কোপ মেরে খুন করে। স্ত্রীকে খুনের পরেই সুব্রত পালিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে খবর পেয়ে রীতার বাপের বাড়ির লোকজন আসেন। রীতাকে খুনের অভিযোগে স্বামী সুব্রত রায়ের বিরুদ্ধে ময়না থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রীতাদেবীর ভাই। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঠায়। পরে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে সুব্রতর জেল হেফাজত হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (তৃতীয়) মৌ চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলার শুনানি চলছিল।
সরকার পক্ষের আইনজীবী উত্তরসখা বেরা বলেন, ‘‘বছর সাঁইত্রিশের ওই মহিলাকে খুনের অভিযোগে তাঁর স্বামী সুব্রতকে গ্রেফতারের পরে আদালতের নির্দেশে জেল হেফাজতে থাকাকালীন পুলিশ চার্জশিট জমা দিয়েছিল। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের (তৃতীয়) এজলাসে শুনানির পর বিচারক অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন। খুনের দায়ে সুব্রতকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং বধূ নির্যাতনের দায়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। জরিমানা অনাদায়ে অতিরিক্ত কারাবাসের নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক।’’