তাজপুর পর্যটন কেন্দ্র। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
সৈকতে ঢোকার আগে দাঁড়িয়ে কয়েকটি গাড়ি। বালুকাতটে পর্যটকদের ঘোরাফেরা। তাঁদের পাশেই মাছ ধরে ঘরে ফিরছেন এক ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী।
বৃহস্পতিবার সকালে তাজপুরের ছবিটা ছিল এমনই— শান্ত, স্বাভাবিক।
এই তাজপুরেই বন্দর তৈরির ব্যাপারে এক ধাপ এগিয়েছে রাজ্য সরকার। দিঘায় শিল্প সম্মেলনের মঞ্চ থেকে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাজপুরে বন্দরের ‘সাইট অফিস’ তৈরির কাছের সূচনা করেছেন। শোনা যাচ্ছে, আজ, শুক্রবার এখানে আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। তার ২৪ ঘণ্টা আগে বঙ্গোপসাগরের তীরে এই ছোট্ট পর্যটন কেন্দ্র ছিল একেবারেই নিস্তরঙ্গ।
এ দিন তাজপুর যাওয়ার পথে শঙ্করপুর মৎস্য বন্দর পেরিয়ে মেরিন ড্রাইভ ধরে ছুটছিল গাড়ি। তাজপুরের কাছে সাইকেলে চেপে মাছ বিক্রি করতে যাচ্ছিলেন মাঝ বয়সী এক ব্যক্তি। তাঁর সামনে দাঁড়াতেই থতমত খেলেন তিনি। ভেবেছিলেন, কোনও প্রশাসনিক লোকজন এসেছেন। বন্দর কোথায় হবে জানতে চাওয়ায় সামনের দিকে আঙুল দেখিয়ে সোজা চলে গেলেন। তাজপুরে পৌঁছে বোঝা গেল, এখানে স্থানীয়দের কেউ কেউ মুখ্যমন্ত্রীর বন্দর তৈরি নিয়ে ঘোষণার কথা জানেন। কিন্তু বন্দর কবে, কোথায় তৈরি হবে, সে নিয়ে তাঁদের কোনও ধারণা নেই, চিন্তাও নেই।
স্থানীয়দের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, মাসদুয়েক আগে ওই এলাকায় সমুদ্রপথে কয়েকজন আধিকারিক এসেছিলেন। তাঁরা জমি জরিপ করে গিয়েছিলেন। এ দিন অবশ্য শিল্প সম্মেলনের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘তাজপুরের বন্দরের পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য বিশ্ব ব্যাঙ্ক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা এগিয়ে আসতে পারেন।’’ এছাড়াও, বন্দরের পরিকাঠামো তৈরির ব্যাপারে নানা কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
নির্দিষ্ট কোন অংশে বন্দর তৈরি হবে, সে নিয়ে অবশ্য কিছু জানা যায়নি। সাইট অফিস তৈরির কোনও তোড়জোড় এ দিন নজরে পড়ল না। প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, তাজপুর এবং জলধার মধ্যবর্তী কোনও অংশে বন্দরের কাজ হতে পারে। জলধার এক বাসিন্দা অনিল গড়াই বলেন, ‘‘কাজের সূচনা হয়ে গিয়েছে ঠিক। কিন্তু বন্দরের কাজ কবে থেকে শুরু হবে, আশা করি মুখ্যমন্ত্রী গ্রামে এলে তা স্পষ্ট বুঝতে পারব।’’ স্থানীয় টোটো চালক মৃত্যুঞ্জয় বেরার কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এসে পরিকাঠামো দেখে গেল ভাল হয়।’’
তাই আজ, ‘দিদি’ তাজপুরে যাচ্ছেন কি না, সেই আশায় এলাকাবাসী।