পরিকাঠামোয় ত্রুটির অভিযোগ
Swab

অকেজো কিয়স্কে বন্ধ লালারস সংগ্রহ

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কেরালা সরকারের মডেলে করোনা ভাইরাস টেস্টিং কিয়স্ক তৈরির পরিকল্পনা হয়।

Advertisement

গোপাল পাত্র

এগরা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২০ ০৭:৪২
Share:

জেলায় ব্যবহৃত এমন কিয়স্ক নিয়েই উঠেছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

সংক্রমণ যত বাড়ছে জেলাতে ততই অকেজো হয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস টেস্টিং কিয়স্ক। ফলে ঝুঁকি নিয়ে ফাঁকা ঘরে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করতে বাধ্য হচ্ছেন চিকিৎসকেরা। এই অবস্থায় কিয়স্কগুলির পরিকাঠামোর মান নিয়ে উঠছে প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কেরালা সরকারের মডেলে করোনা ভাইরাস টেস্টিং কিয়স্ক তৈরির পরিকল্পনা হয়। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের কারিগরি তত্ত্বাবধানে কিয়স্কগুলি তৈরির পরে স্বাস্থ্য দফতর সেগুলির অনুমোদন দেয়। জেলার প্রতিটি ব্লক ও মহকুমা হাসপাতালে করোনা ভাইরাস টেস্টিং কিয়স্কগুলি প্রাথমিক ভাবে বাসানো হয়। এছাড়াও প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে মানুষের লালারসের নমুনা সংগ্রহের জন্য জেলায় দুটি ভ্রাম্যমাণ কিয়স্ক চালু করা হয়। সব মিলিয়ে জেলায় ২৮টি করোনা ভাইরাস টেস্টিং কিয়স্ক রয়েছে। কিন্তু কিয়স্কগুলির পরিকাঠামো নিয়ে ইতিমধ্যেই উঠেছে একাধিক প্রশ্ন?

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর হলদিয়ার উন্নয়ন পর্ষদের পাঠানো কিয়স্ক গুলির ভিতর সম্পূর্ণ বায়ুরুদ্ধ পরিবেশ। পিপিই পরে কিয়স্কে চিকিৎসকেরা ঢুকে গ্লাভসের সাহায্য বাইরে থাকা ব্যক্তির লালারসের নমুনা সংগ্রহ করেন। ভিতরে কোনও কুলিং সিস্টেম নেই। এমনকী নেই পাখাও। খোলা জায়গায় কিয়স্কগুলিকে রেখে গরমে অস্বস্তিকর পরিবেশে চিকিৎসকদের কাজ করতে হয়। ফলে অত্যাধিক গরমে চিকিৎসকেরা অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে এগরা মহকুমা সহ জেলার বিভিন্ন ব্লকে কিয়স্ক পরিষেবা অনেকে বন্ধ রেখেছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে করোনা ভাইরাস টেস্টিং কিয়স্কগুলি। এগরা মহকুমায় তিনটি ব্লক হাসপাতালে সম্পূর্ণ বন্ধ এই পরিষেবা। ফলে ঝুঁকি নিয়ে ঘরের মধ্যে সংক্রমিত ব্যক্তির খুব কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করছেন চিকিৎসকেরা।

Advertisement

সম্প্রতি পটাশপুর-২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের করোনা টেস্টিং কিয়স্কে নমুনা সংগ্রহ করার সময় অত্যাধিক গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন এক চিকিৎসক। তারপর থেকে সেই কিয়স্ক পরিষেবা বন্ধ করেছে হাসপাতাল। পটাশপুর-১ ও এগরা-২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কিছুদিন কিয়স্ক পরিষেবা চালু থাকার পরে একই সমস্যায় সেখানেও বন্ধ রাখা হয়েছে। কিয়স্ক পরিষেবা নিরাপদ হলেও পরিকাঠামোর ত্রুটিই এগুলি বন্ধ রাখার কারণ বলে জেলার চিকিৎসকদের একাংশ জানিয়েছেন। গরমে দমবন্ধ পরিস্থিতিতে এ ভাবে কাজ করা সম্ভব নয় বলেও চিকিৎসকদের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পটাশপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘কিয়স্কের ভিতরে গরম ও দমবন্ধ পরিস্থিতিতে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। কাজ করতে গিয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তাই ঝুঁকি জেনেও কিয়স্ক বন্ধ রেখে ঘরের মধ্যে লালা রসের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।’’

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডলের দাবি, ‘‘কিয়স্কগুলি থেকে নিয়মিত লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। কয়েক জায়গায় সামান্য সমস্যার কারণে কিয়স্কগুলি বন্ধ রয়েছে। তবে পরিকাঠামোর বিষয়টি হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ কর্তৃপক্ষ দেখাশোনা করছে।’’

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement