বিজেপি’র ‘রথ’ (উপরে)। নিজস্ব চিত্র
অন্য জেলার মতোই সোমবার পূ্র্ব মেদিনীপুরে শুরু হল বিজেপি’র ‘পরিবর্তন রথযাত্রা’। যদিও অন্য একাধিক জেলার মতো এ দিন বিজেপি’র ওই কর্মসূচির শুরুতে দেখা যায়নি কোনও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বা জেলার ভূমিপুত্র শুভেন্দু অধিকারীকে। রথযাত্রা কর্মসূচিতে পটাশপুরের কনকপুরে হাজির ছিলেন বিজেপি নেত্রী তথা সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং জুমকিতে ছিলেন পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোর্তিময় সিং মাহাতো।
এ দিন পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল থেকে বিজেপির ‘পরিবর্তন যাত্রা’র রথ আসে পটাশপুরে। বিজেপি সূত্রের খবর, জেলার পরিবর্তন যাত্রার ওই কর্মসূচির শুরুতে হাজির থাকার কথা ছিল দলের রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষের। তবে শেষ মুহূর্তে তা বাতিল হয়। অন্যদিকে, বিজেপি নেত্রী লকেট এ দিন কর্মসূচি এলেও তাঁকে চড়তে দেখা যায়নি রথে। তিনি গাড়িতে করে সোজা হাজির হয়েছিলেন পটাশপুরের কনকপুরের সভামঞ্চে। ফলে পটাশপুর থেকে কনকপুর পর্যন্ত রথের যাওয়ার রাস্তায় তাঁর যে অনুগামীরা হাজির হয়েছিলেন, তাঁদের ফিরতে হয় আশাহত হয়েই।
কনকপুর বাজারে আয়োজিত সভায় লকেটের বক্তব্য নিশানায় ছিল কালীঘাট। পাশাপাশি, পরিবারের নিরাপত্তার জন্য নারীদের হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার নিদান দিয়েছেন তিনি। লকেট এ দিন কয়লা এবং গরু পাচারের সিবিআই তদন্ত প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘কয়লা চুরিতে বড় বড় নাম চলে আসছে। সিবিআই কাছে কয়লা চুরিতে যে নাম আছে, তারা তো কালীঘাটের দিকে চোখ তুলে বলছে চোর ওই দিকে আছে। সিবিআই ওদিকে যাচ্ছে। চোর ধরা পড়বে। দোষীদের শাস্তি হবে। বলে না চোরের মায়ের বড় গলা।’’
রাজ্যে নারী নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে লকেটের মন্তব্য, ‘এখন শুরু করেছে দুয়ারে দূত। যেন মনে হচ্ছে দুয়ারে যম দূত আসছে। সব তোলাবাজি কাটমানি খাওয়া লোক যমদূত হয়ে গাড়ি নিয়ে ঘুরছে। রাজ্যে নারী নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। নারীদের থেকে এই মুখ্যমন্ত্রী মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। ভোটের সময় প্রশাসনকে ভরসা করবেন না। আগামী দিনে নিজের পরিবারকে সুস্থ রাখতে হলে মা-বোনকে হাতে অস্ত্র তুলে নিতে হবে। পুলিশ প্রশাসন না পারলে নারীদের রাস্তায় অস্ত্র নিয়ে লড়াই করতে হবে।’’ রাজ্যে অনুপ্রবেশের অভিযোগ করে সাসংদের দাবি, ‘‘দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহিরাগত বলা হচ্ছে। আর তুমি (মমতা) ওপার থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে এসে এখানে ঘাঁটি গেড়ে দেবে। তাঁদের জাল ভোটার কার্ড করে দেবে। তারাই আজ বাংলার নাগরিক। মানুষ সব বুঝে গিয়েছে।’’
এ দিন বিজেপি’র ওই কর্মসূচি ছিলেন রাজ্য নেতা রীতেশ তেওয়ারি, বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী প্রমুখ। কিন্তু অধিকারী তালুক পূর্ব মেদিনীপুরে জেলার দাপুটে বিজেপি নেতা শুভেন্দুকে এ দিন কেন দেখা গেল না দলীয় কর্মসূচিতে! এ ব্যাপারে অনুপ বলছেন, ‘‘জেলার সবাই হেভিওয়েট নেতা। দিলীপবাবু জরুরি কারণে আসতে পারেননি। তবে আগামী পরশু শুভেন্দু অধিকারী পরিবর্তন যাত্রায় থাকবেন।’’