বৈঠক অসমাপ্ত রেখেই চলে গিয়েছিলেন। আট দিনের মাথায় ফের বৈঠকে বসার কথা দিলেও আসতে পারেননি। তবে ১ মাস ১০ দিন পরে আজ, শনিবার ফের খড়্গপুরে আসছেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। ওই দিন ফের তৃণমূল কাউন্সিলর ও ওয়ার্ডের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন তিনি।
গত লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্র হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। তার মধ্যে শুধুমাত্র খড়্গপুর শহরেই ৪৫ হাজার ভোটে ‘লিড’ পেয়েছে বিজেপি। এরপরে ওই এলাকা পুনরুদ্ধারে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দায়িত্ব নিয়েই খড়্গপুরের নেতা ও কাউন্সিলরদের নিয়ে কোলাঘাটে বৈঠক করেন শুভেন্দু। তারপর খড়্গপুরে কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করে শুভেন্দু জানান, প্রতিটি ওয়ার্ডের ১০ জন করে প্রতিনিধি ও কাউন্সিলরকে নিয়ে পৃথকভাবে বৈঠকে বসবেন তিনি। গত ১৬ জুন খড়্গপুর পুরসভায় সেই বৈঠক হয়। সেখানে ইন্টারভিউ-এর ধাঁচে প্রতিটি ওয়ার্ডকে আলাদাভাবে ডেকে বৈঠক হয়। তবে একই ওয়ার্ডে তৃণমূলের একাধিক গোষ্ঠী আলাদাভাবে বৈঠকে যাওয়ার দাবিতে গোলমাল দেখা যায়। সে দিন খড়্গপুরের ৩৫টি ওয়ার্ডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকলেও রাত হয়ে যাওয়ায় ১২টি ওয়ার্ডের সঙ্গে আলোচনা করেই ফিরে যান শুভেন্দু। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, ২৪ জুন এসে বাকি ওয়ার্ডের সঙ্গে বসবেন। কিন্তু সে দিন তিনি আসেননি। অসমাপ্ত সেই বৈঠক করতেই আজ তিনি রেল শহরে আসবেন।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বাকি থাকা ২৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টি ওয়ার্ডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসবেন শুভেন্দু। তবে বৈঠক বার বার পিছিয়ে যাওয়ায় এ বার অনেক কাউন্সিলরের মধ্যেই আগ্রহ কম। রেল শহরের এক তৃণমূল কাউন্সিলরের কথায়, “একে লোকসভা নির্বাচনে খারাপ ফল হওয়ায় কর্মীরা আশাহত। তার ওপরে ১৬ জুন সকলকে বুঝিয়ে নিয়ে গিয়ে ফেরত আনতে হয়েছে। তারপর ফের ২৪ জুন বৈঠক হবে বলেও হল না। সব মিলিয়ে কর্মীরা ক্ষুব্ধ। এ বার আবার বৈঠকের কথা কর্মীদের কাছে বলার আগেভাবতে হবে।” রেলশহরের কয়েকজন তৃণমূল কাউন্সিলর ও নেতা ইতিমধ্যেই পারিবারিক নানা সমস্যার কথা বলে ওই বৈঠক এড়াতে চাইছেন। যেমন শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুনিতা গুপ্তের স্বামী রাজু গুপ্ত বলেন, “মেয়ের ভর্তির ব্যাপারে বিশাখাপত্তনম যেতে হবে। তাই আমি ও কাউন্সিলর বৈঠকে থাকতে পারব না বলে দলের শহর সভাপতিকে জানিয়ে দিয়েছি।” এমন পরিস্থিতিতে ওই বৈঠক কতটা ফলপ্রসূ হবে সেই নিয়ে দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে।
তৃণমূলের খড়্গপুর শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, শনিবার তিনি বাকি থাকা ওয়ার্ডগুলির মধ্যে ১৩টি ওয়ার্ড নিয়ে বৈঠক করবেন। বাকিগুলি নিয়ে পরে বৈঠক হবে। সময় নিয়ে আলোচনা করার জন্যই এই উদ্যোগ। সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরদের সেই বিষয়ে জানানো হয়েছে। বৈঠকে সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা হবে।”