শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র
এক বিজেপি নেতার গ্রেফতার না হওয়া প্রসঙ্গে দিনদুয়েক আগে প্রকাশ্য সভায় পুলিশকে ‘অপদার্থ’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সেই সভার ২৪ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই পুলিশের জালে ধরা পড়লেন খেজুরির ওই বিজেপি নেতা অতনু পাণিগ্রাহী।
এক সময় তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী অতনুর সম্পর্কে গত ২৪ নভেম্বর খেজুরির সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন শুভেন্দু। অভিযোগ করেছিলেন, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত অতনু এলাকায় নিশ্চিন্তেই রয়েছেন। এর পরেই বীরবন্দরের বাসিন্দা অতনুকে ভবানীপুর থানার পুলিশ ডাকাতির অভিযোগে গত ২৫ নভেম্বর রাতে গ্রেফতার করে। তাঁর কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। অতনুর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৯৯, ৪০২-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ফৌজদারি ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, শুভেন্দুর সভার পর থেকেই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন অতনু। স্থানীয় বিজেপি নেতা অনুপ ভক্তা বলেন, ‘‘অতনুর স্ত্রী এলাকার বাইরে। পরিবারের অন্য সদস্যরাও ভিন্ রাজ্যে চাকরি করেন। ওঁকে শুভেন্দুর সভার দিন সন্ধা থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ব্যাপারে বারবার খেজুরি থানায় নিখোঁজ অভিযোগ জানাতে গিয়ে ব্যর্থ হই। পুলিশ অভিযোগ নিচ্ছিল না। সোমবার পুলিশ জানায়, অতনুকে ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসলে এটা শাসকদলের চক্রান্ত।’’
উল্লেখ্য, ঘাসফুলের এলাকা বলে পরিচিত খেজুরিতে গত লোকসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরের ভোট অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। এর পিছনে শাসকদলের একাংশের মদত ছিল বলে হামেশাই অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। এলাকায় বিজেপি’র জমি শক্ত হওয়ার পিছনে অঞ্চল যুব তৃণমূল প্রাক্তন সভাপতি অনুপ এবং অতনুর ভূমিকা রয়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলেরও। এই পরিস্থিতিতে অতনুর গ্রেফতার তৃণমূলের ষড়যন্ত্র বলেই অভিযোগ বিজেপি’র।
বিজেপির জেলা সভাপতি (কাঁথি) অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অতনু খেজুরিতে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তা পরিবহণ মন্ত্রী মেনে নিতে পারছিলেন না। তাই ওঁকে প্রথমে দলীয় সভা থেকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এখন মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে।’’ যদিও খেজুরি-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি সত্যরঞ্জন বেরার দাবি, ‘‘হলদিয়ায় ডাকাতি করতে গিয়ে অতনু পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে বলে শুনেছি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের দল কখনও প্রশাসনিক কাজে হস্তক্ষেপ করে না।’’ মঙ্গলবার অতনুকে হলদিয়া আদালতে তোলা হলে বিচারক ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন