শুভেন্দু অধিকারী। — ফাইল চিত্র।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির এলাকা কাঁথি। অথচ সেখানেই নড়বড়ে বিজেপির সংগঠন। একশোর কাছাকাছি বুথে পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই দলের। পরিস্থিতি দেখে চলতি নভেম্বরের সব বুথে পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিলেন শুভেন্দু নিজেই।
বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট। প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। মাঠে নেমে পড়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও। সেই মতো শনিবার সকালে কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির বর্ধিত কমিটির বৈঠক হয় খেজুরিতে। মূল বক্তা ছিলেন শুভেন্দুই। সেখানে নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়কের সামনে উঠে আসে দলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বুথগুলির স্পষ্ট চিত্র।কাঁথি লোকসভার অন্তর্গত ৭টি বিধানসভায় ১,৬০০ র কাছাকাছি বুথ রয়েছে। তার মধ্যে ৭০ থেকে ৭২টি বুথে এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। মূলত সংখ্যালঘু এবং সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় এই সমস্যা রয়েছে বলে জেলা নেতৃত্ব জানান।
২০২৪ এর লোকসভা ভোটে বাংলায় ৩৫ আসন জেতার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ইতিপূর্বে একাধিকবার শুভেন্দু ও ঘোষণা করেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের দু’টি লোকসভা কাঁথি এবং তমলুক উপহার দিতে হবে নরেন্দ্র মোদীকে। সাংগঠনিক বৈঠকে এসে বুথ কমিটি নিয়ে জেলা নেতাদের নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। তারপরেও সব বুথে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। চলতি মাসের মধ্যে তা করে ফেলার নির্দেশ এ দিন দেন শুভেন্দু।
বৈঠকে মণ্ডল সভাপতি এবং ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরাও আমন্ত্রিত ছিলেন। লোকসভা ভোটের আগে এই পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের কাজ কতটা জরুরি, তা-ও মনে করিয়ে দেন বিরোধী দলনেতা। ফলে, তাঁরা যাতে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে না পড়েন, সে ব্যাপারে সতর্ক করে দেন। ঐক্যের বার্তাও দিয়েছেন শুভেন্দু। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন বিজেপি নেতা বলছেন, ‘‘বঙ্গ বিজেপি শাসক দলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। আমরা জেলায় যেখানে যেখানে ক্ষমতায় রয়েছি, সেখানে দুর্নীতি হচ্ছে কিনা সর্বক্ষণ নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছেন মহকুমাশাসক এবং বিডিওরা। সেই দাগ যাতে না লাগে, বিরোধী দলনেতা সকলকে আগাম সচেতন করেছেন"।
এ দিন শুভেন্দু দলের জেলা ও মণ্ডল স্তরের পদাধিকারীদের আরও জানিয়েছেন, হলদিয়া বা তমলুকে দলের পক্ষ থেকে চালু হবে কল-সেন্টার। বার্ধক্য ভাতা-সহ অন্য পরিষেবা সংক্রান্ত অভাব-অভিযোগ সেখানে ফোন করে সরাসরি জানাতে পারবেন।
বৈঠকে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরূপ দাস-সহ দলের বিধায়কেরা এবং জেলা ও লোকসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্য স্তরের বিজেপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন। যদিও বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডল বলেছেন, ‘‘সম্পূর্ণ সাংগঠনিক বিষয়ে বৈঠক হয়েছে। প্রকাশ্যে বলা যাবে না।’’ তবে চন্দ্রশেখর জানান, ‘‘আগামী ২৯ তারিখ কলকাতায় বঞ্চিতদের নিয়ে কর্মসূচি রয়েছে। তা সফল করার জন্য রূপরেখা চূড়ান্ত করে দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। সেই মতো জেলা এবং মণ্ডল স্তরে প্রস্তুতি নেওয়া হবে।’’