সরল শুভেন্দুর বৈঠক, মিছিলে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব 

জেলা পর্যবেক্ষকের বৈঠকের আগে প্রকাশ্যে এসেছে শহর ও জেলা নেতাদের দ্বন্দ্ব। জাতীয় নাগরিক পঞ্জি ও নতুন নাগরিক আইনের বিরোধিতায় সোমবার জেলা তৃণমূলের উদ্যোগে অরণ্যশহরে মহামিছিলের ডাক দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:২৮
Share:

শুভেন্দু অধিকারী।—ফাইল চিত্র।

তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর দলীয় সাংগঠনিক বৈঠকের স্থান পরিবর্তন হল। আজ, মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম ব্লকের লোধাশুলির পথসাথী ভবনে ওই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে শেষ মূহূর্তে সিদ্ধান্ত বদল। বৈঠক ঝাড়গ্রামে হচ্ছে না। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল চারটেয় মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে ঝাড়গ্রাম জেলার নেতা-নেত্রীদের বৈঠকে ডেকেছেন শুভেন্দু।

Advertisement

জেলা পর্যবেক্ষকের বৈঠকের আগে প্রকাশ্যে এসেছে শহর ও জেলা নেতাদের দ্বন্দ্ব। জাতীয় নাগরিক পঞ্জি ও নতুন নাগরিক আইনের বিরোধিতায় সোমবার জেলা তৃণমূলের উদ্যোগে অরণ্যশহরে মহামিছিলের ডাক দেওয়া হয়। হিন্দুমিশন মাঠ থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি মূল রাস্তা পরিক্রমা করে পাঁচমাথার মোড়ে শেষ হয়। মিছিলের শেষে পাঁচমাথার মোড়ে পথসভা চলাকালীন শহর তৃণমূলের কিছু কর্মী মাইক নিয়ে জমায়েতে ঢুকে চিৎকার করে সভা বানচালের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। ‘শহর সভাপতি প্রশান্ত রায় জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। ওই সময় জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি দেবনাথ হাঁসদা বক্তৃতা করছিলেন। পথসভায় ছিলেন জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী বিরবাহা সরেন, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস সহ জেলা ও বিভিন্ন ব্লক তৃণমূলের শীর্ষ নেতা-নেত্রীরা। শহর তৃণমূলের সভাপতি প্রশান্ত রায়ের উপস্থিতিতেই কিছু কর্মী টোটোতে মাইক বেঁধে সেখানে এসে স্লোগান দিতে থাকেন। এর ফলে দেবনাথের কোনো বক্তব্য শোনা যাচ্ছিল না। বিশৃঙ্খলার জেরে পথসভা ভণ্ডুল হওয়ার উপক্রম হয়। জেলা সভানেত্রী বিরবাহা কর্মীদের কাছে গিয়ে বক্তৃতা চলাকালীন স্লোগান দেওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। মিনিট কুড়ি পরে অবশ্য ওই কর্মীরা সেখান থেকে চলে যান। সভা ফের চলতে থাকে।

তৃণমূলের অন্দরের খবর, জেলা সভানেত্রী বিরবাহার সঙ্গে শহর যুব তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাহাতোর সুসম্পর্ক রয়েছে। প্রশান্ত গোষ্ঠীর সঙ্গে অজিত গোষ্ঠীর বনিবনা নেই। জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু মাস তিনেক আগে মেদিনীপুরে দলের এক বৈঠকে দশজনের ঝাড়গ্রাম শহর কোর কমিটি গড়ে দেন। পরে আরও দশ জনকে নিয়ে কোর কমিটির বর্ধিত তালিকা তৈরি করার জন্য শহর সভাপতিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন শুভেন্দু। সেই তালিকায় নতুনদের নাম রাখা নিয়ে প্রশান্ত গোষ্ঠীর সঙ্গে জেলা নেতৃত্বের একাংশের টানাপোড়েন চলছে। এদিন পথসভায় হইচইয়ের পিছনে সেই টানাপোড়েনেরই ছায়া দেখছেন দলের অনেকে। শহর তৃণমূলের সভাপতি প্রশান্তের উপস্থিতিতেই হইচই হয়েছে। যদিও তিনি বলেন, ‘‘আমি পথসভায় ছিলাম না। কী হয়েছে আমার জানা নেই।’’

Advertisement

শহর যুব তৃণমূলের সভাপতি অজিত বলেন, ‘‘সবাই মিলেমিশে দলের কাজ করলে সেটা দলের পক্ষে ভাল হয়। কিন্তু পথসভা চলাকালীন কিছু কর্মী যেভাবে বিশৃখল আচরণ করেন, সেটা খুবই দৃষ্টিকটু হয়েছে।’’

বিরবাহার সতর্ক জবাব, ‘‘সভা চলাকালীন অনেক লোকজন হওয়ায় হইচই হয়েছিল। করজোড়ে চুপ করার অনুরোধ করেছিলাম। এর বেশি

কিছু নয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement