ফাইল চিত্র।
‘বামেরা হয়ে গিয়েছিলেন রাম’— লোকসভা ভোটের পরে এমন অভিযোগ করতে শোনা গিয়েছে বহু তৃণমূল নেতৃত্বের মুখে। এবার বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রকাশ্য জনসভা থেকে বামেদের একজোট হওয়ার আহ্বান হলেন। পাশাপাশি, আর্থিক প্রতারণার মামলায় তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ কেডি সিংহের গ্রেফতারি প্রসঙ্গেও তিনি কটাক্ষ করেন।
বুধবার ভগবানপুর-২ ব্লকের অর্জুননগরে দলীয় জনসভা ছিল শুভেন্দুর। সেখানে ছিলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ও। সভায় আগামী বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে এক জোট হওয়ার জন্য বামেদের আহ্বান জানিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘যারা সিপিএম করছেন, তাঁদের বলছি আপনারা এক হোন। আমাদের লক্ষ্য এখন একটাই-জয় শ্রীরাম। বিজেপিকে ভোট দিতে হবে।’’
জনসভা শেষ করে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন শুভেন্দু। সেখানে কে ডি সিংহের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘শুধু গ্রেফতার করলে হবে না। ৭০ লক্ষ মানুষ প্রতারিত হয়েছেন, যা সম্পত্তি রয়েছে সব বাজেয়াপ্ত করতে হবে এবং প্রতারিত সাধারণ মানুষের টাকা ফেরত দিতে হবে।’’ উল্লেখ্য, সারদা, নারদা এবং রোজভ্যালির মতো আর্থিক দুর্নীতি কাণ্ডে শুভেন্দুকে কাঠগড়ায় তুলেছে তার পুরনো দল তৃণমূল। কিন্তু এ দিন আর্থিক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তার পুরাতন দলের নেতার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা এবং সাধারণ মানুষের অর্থ ফেরত দেওয়ার যে দাবি শুভেন্দু অধিকারী করলেন, তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
অর্জুননগরের সভায় করোনার টিকাকরণ নিয়েও রাজনীতির পারদ চড়েছে। শুভেন্দু বলেন, ‘‘দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যদি আগে বিনামূল্যে প্রতিষেধক দেওয়া হবে না বলতেন, তাহলে এ রাজ্যে মাননীয়া সেটাকে টিকাশ্রী প্রকল্প বলে চালিয়ে নিতেন।’’ একা শুভেন্দু নন, বিনামূল্যে করোনার প্রতিষেধক বিতরণ কর্মসূচি প্রসঙ্গে ওই সভায় কটাক্ষ করেছেন লকেটও। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিষেধক তৈরি করছেন বিজ্ঞানীরা। সিরাম ইনস্টিটিউট এবং ভারত বায়োটেক সংস্থা থেকে তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এমন ভাব দেখানো হচ্ছে যেন কালীঘাটের বাড়িতেই করোনার প্রতিষেধক তৈরি হচ্ছে। বাজারে এল না, অথচ তার আগে থেকেই বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হবে বলে প্রচার করা হচ্ছে।’’
আগামী ১৮ জানুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের তেখালিতে জনসভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় তৃণমূল নেত্রীর এটি প্রথম কর্মসূচি। এ দিল সেই প্রসঙ্গ কে তুলে ধরে শুভেন্দু বলেন, ‘‘১৮ জানুয়ারি মাননীয়া আসছেন। কতদিন বাদে নন্দীগ্রামের কথা মনে পড়ল। ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর শেষবার নন্দীগ্রামে এসেছিলেন। সেদিন উনি কি কি বলেন, তিনি যা যা কুৎসাশ্রী প্রচার করবেন, পরের দিন এক লক্ষ লোকের জমায়েত করব। তার প্রত্যেকটি মিথ্যে কথা জবাব দেব। সেদিন আমি আর বাবুল সুপ্রিয় থাকব।’’