উদ্বোধনে শুভেন্দু। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
মেলা এবং প্রদর্শনীর উদ্বোধনে এসেছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী। সেখানে নাম না করে দলীয় এক নেতৃত্বকে ‘এলোমেলো’ লোক বলে কটাক্ষ করলেন তিনি। জেলার রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, শুভেন্দুর এ দিনের কটাক্ষ শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানাকে নিয়ে। যিনি বিগত কয়েক বছরের ওই মেলা কমিটির যুগ্ম সভাপতি ছিলেন।
রবিবার কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উপনগরীর মাঠে শুরু হয়েছে ৩৬তম কেটিটিপি মেলা ও প্রদর্শনী। এবার মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গত কয়েক বছরের চেনা ছবিটা দেখা যায়নি। মঞ্চের আশপাশেও দেখা গেল না দিবাকরকে। অথচ গত কয়েক বছর ধরে দিবাকরই ছিলেন কেটিপিপি মেলার ‘সর্বেসর্বা’। এ দিন মেলার উদ্বোধনে বক্তৃতা করার সময় শুভেন্দু বলেন, ‘‘এবার মেলার আয়োজনে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছিল। আমি তাঁদের উৎসাহ দিয়েছিলাম। আমি বলেছিলাম আপনারা করুন, ঠিক আগের ছন্দে করুন। তাঁরা সেটা করতে পেরেছেন। মাঝে একটু এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। এটা মূলত এখানের চাকুরিজীবীদেরই অনুষ্ঠান। ঠিকাদাররা সঙ্গে থাকেন। কিছু এলোমেলো লোক ঢুকে গিয়েছিলেন। তাঁরা বেরিয়ে গিয়েছেন। ভালই হয়েছে।’’
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে কেটিপিপি মেলা পরিচালনায় গঠিত হয় সমন্বয় কমিটি। কোলাঘাট ব্লক, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক ও কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র রিক্রিয়েশন ক্লাব ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সমস্ত সংগঠন নিয়ে গঠিত হয়েছিল কমিটি। যুগ্ম সভাপতি ছিলেন দিবাকর। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হন শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জয়দেব বর্মন। এছাড়া, আয়োজক হিসাবে তিনি গত বছরের মেলার খরচের হিসাবও দেননি বলে দাবি। গত নভেম্বরে দিবাকরকে মেলার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
এক সময় শুভেন্দু অনুগামী বলে পরিচিত দিবাকরের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ উঠেছে যে, তা জেলা নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। পাঁশকুড়ার তৃণমূল নেতা কুরবান শা খুনের এক প্রতিবাদ সভায় দলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর সঙ্গেও তাঁর দূরত্ব নজর এড়ায়নি।
শুভেন্দুর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দিবাকরকে ফোন করা হয়েছিল। তবে তিনি মন্তব্য করতে চাননি। বিজেপি অবশ্য কটাক্ষ করেছে। বিজেপির তমলুক জেলার সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে শুভেন্দুর ছায়ায় থেকে দিবাকর এলাকা দখল করে তৃণমূলের হাতে তুলে দিয়েছেন। তমলুক ও শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে কোটি কোটি টাকা কাটমানি নিয়েছেন। এখন শুভেন্দু কেন এই মন্তব্য করছেন? তাহলে কি দিবাকর কাঁথিতে নৈবেদ্য দিচ্ছেন না!’’