কাঁথি: নিজেদের ‘গড়ে অধিকার’ হারিয়েছে অধিকারী পরিবারের। কিন্তু শহরে জনসংযোগ হারাতে চান না সেই পরিবারের মেজো ছেলে। তাই পুরভোটে তাঁর দল কাঁথিতে আশানুরূপ ফল করতে না পারলেও দোল উৎসবে শুভেন্দু অধিকারীর তরফে লাড্ডুর প্যাকেট পৌঁছে যাচ্ছে শহরবাসীর কাছে।
গত বিধানসভা ভোটে শহরের বেশির ভাগ ওয়ার্ডে এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও এবার পুরভোটে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে গেরুয়া শিবির। কাঁথির ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র তিনটিতে জয়ী হয়েছেন বিজেপির প্রার্থীরা। ভোটে বিজেপির বিধায়ক প্রার্থী সুমিতা সিংহও পুরভোটে হেরে গিয়েছেন। গত বুধবার অধিকারী পরিবারের কোনও সদস্য ছাড়া এই প্রথমবার কাঁথিতে পুরবোর্ড গঠন হয়েছে। যা নিয়ে শাসকদল তৃণমূলের নেতৃত্বের তরফে বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দুকে কটাক্ষও শুনতে হয়েছে। অবশ্য সেই কটাক্ষের জবাব না দিলেও দোল উৎসবে কাঁথিবাসীর সঙ্গে জনসংযোগে মনযোগ দিয়েছেন শুভেন্দু। বৃহস্পতিবার থেকেই প্রায় প্রতি শহরবাসীর বাড়ি বাড়ি হাজির হয়েছেন বিজেপি কর্মীরা। গৃহকর্তা-কর্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছেন লাড্ডু প্যাকেট। সঙ্গে দেওয়া হয়েছে বাতাসা এবং খেসারি কলাই ভাজা (স্থানীয় ভাবে যা চনা নামে পরিচিত)। উপহারের ওই প্যাকেটে লেখা রয়েছে, ‘মাননীয় শুভেন্দু অধিকারী মহাশয়ের অনুপ্রেরণায়’। কাঁথির ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা বলছেন, ‘‘কলিংবেলের আওয়াজ শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখি বিজেপি কর্মীরা হাজির। শুভেন্দুবাবু পাঠিয়েছেন বলে তাঁরা চনা, বাতাসা আর লাড্ডুর প্যাকেট তুলে দিলেন।’’
শুভেন্দুর ওই মিষ্টির প্যাকেট বিলিকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের কাঁথি শহর সভাপতি কমলেন্দু পাহাড়ি বলেন, ‘‘কাঁথিবাসী ওঁদের আর পছন্দ করেন না। বিধানসভা ভোটেও এভাবে বিভিন্ন রকমের উপঢৌকন পাইয়ে সকলের মন কেনার চেষ্টা করেছিলেন। তখন সম্ভব হননি। পরবর্তী ভোটের কথা মাথায় রেখে এখন এসব করলেও লাভ কিছুই হবে না।’’ যদিও এ প্রসঙ্গে শহরের এক বিজেপি নেতা রাম পন্ডা বলছেন, ‘‘শহরের প্রতিটি পরিবারের সঙ্গেই দাদার পারিবারিক সম্পর্ক। সেই সম্পর্ক কোনও দিন কেউ নষ্ট করতে পারবে না। ভোটের দিন তৃণমূল কী করেছে, তা সকলেই জানেন।’’
কাঁথিতে দোল উৎসবকে সামনে রেখে যখন জনসংযোগ রক্ষায় তৎপর শুভেন্দু, তখন তাঁর বিধানসভা এলাকা নন্দীগ্রামে সেভাবে কোনও কর্মসূচি নেই তাঁর। বিজেপি সূত্রের খবর, দোল উৎসব উপলক্ষে নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি আপাতত নেই। এ প্রসঙ্গে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক মেঘনাদ পাল বলেন, ‘‘উনি নন্দীগ্রামের ঘরের ছেলে। সারা বছর সকলের সুখেদুখে পাশে থাকেন। কয়েকদিন আগেই শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে গিয়েছেন। তবে দোলে বিরোধী দলনেতা এলাকায় আসবেন কি না তা আমরা জানতে পারিনি।’’