সোশ্যালে সরব। ছবি: ফেসবুক
যাঁর কাঁধে জেলার ভার, তিনি গরহাজির। আর যিনি পদযাত্রার পুরোভাগে হাঁটলেন, তিনি টুঁ শব্দটিও করলেন না।
শুক্রবার তৃণমূলের জনসংযোগ যাত্রার উদ্বোধনে চন্দ্রকোনায় এসেছিলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তবে ছিলেন না লোকসভা ভোটের পরে দলীয় ভাবে পশ্চিম মেদিনীপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত শুভেন্দু অধিকারী। জেলায় সাংগঠনিক দায়িত্ব যাঁর কাঁধে, মানুষের কাছে পৌঁছনোপ এই কর্মসূচিতে তিনিই না থাকায় জেলা তৃণমূলের অন্দরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার নানা জায়গায় এসে সভা করেছেন শুভেন্দু, কর্মীদের মনোবল বাড়াতে বন্ধ হয়ে যাওয়া পার্টি অফিস খোলার দয়িত্ব নিয়েছেন তিনি। জনসংযোগ প্রচারেও রয়েছে শুভেন্দুর কাট-আউট। অথচ শুভেন্দু না আসায় দলের কর্মী-সমর্থকদের অনেকেই ক্ষুব্ধ। ফেসবুকে কেউ কেউ লিখেছেন, ‘বন্ধ পার্টি অফিস খুলবেন শুভেন্দু, পতাকা বাঁধবেন শুভেন্দু, মিছিল করবে অন্য কেউ— এই নোংরামি বন্ধ হোক’।
শুক্রবার জনসংযোগ যাত্রার সূচনার পরে প্রায় ঘন্টাখানেক নেতা-কর্মীদের সঙ্গে হেঁটেছেন অভিষেক। তবে চন্দ্রকোনা আসা ইস্তক কোনও কথা বলেননি। প্রথম দিনের পদযাত্রা কালিকাপুর পযর্ন্ত যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গাছশীতলা মোড় থেকে আড়াই কিলোমিটার এসে জয়ন্তীপুরেই শেষ হয় কর্মসূচি। আলাদা করে কর্মীদের উদ্দেশ্যে কিছু বলেননি ফিরহাদও। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জনসংযোগ কর্মসূচি কী তা নিয়ে দু-এক কথা বলেন তিনি।
এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের অন্দরেই একাংশের প্রশ্ন, নেতারা যদি জেলা সফরে এসে কর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্যই না রাখেন তা হলে এমন কর্মসূচির মানে কী। এ ভাবে কি জনসংযোগ বাড়ানো আদৌ সম্ভব। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির অবশ্য ব্যাখ্যা, ‘‘দলের নেতাদের কে কোন কর্মসূচিতে জেলায় আসবেন সেটা দলের রাজ্য নেতৃত্ব ঠিক করেন। এ নিয়ে বলার কিছু নেই।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘শনিবার পিংলায় এই কর্মসূচি হয়েছে। বৃষ্টি ভিজেই আমরা পদযাত্রা করেছি। মানুষের কাছে পৌঁছেছি।’’
তৃণমূলের জনসংযোগ যাত্রার দ্বিতীয় দিন, শনিবার কালিকাপুর থেকে মিছিল শুরু হয়। শেষ হয় ক্ষীরপাই শহর পেরিয়ে মহাবালায়। বিকেলে ফের জাড়া থেকে পদযাত্রা হয় শ্রীনগর পর্যন্ত। এ দিনের পদযাত্রায় শুরুতে খুব কম লোক ছিল। জেলা নেতাদের কেউ ছিলেন না। চন্দ্রকোনার বিধায়ক ছায়া দোলইয়ের, ক্ষীরপাই পুরসভার চেয়ারম্যান দুর্গাশঙ্কর পানেদের নেতৃত্বে মিছিল শুরু হয়। ক্ষীরপাই শহরে এসে মিছিলে ভিড় কিছুটা বাড়ে। আজ, রবিবার রামজীবনপুর থেকে মিছিল ঢুকবে হুগলির হাজিপুরে। পশ্চিম মেদিনীপুর তৃণমূল নেতৃত্বের কাছ থেকে মিছিলের দায়িত্ব নেবে হুগলির নেতৃত্ব।