মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে শুভেন্দু।
দু’দিন আগে নন্দীগ্রামে এসে স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে অন্য আসনে লড়ার ‘পরামর্শ’ দিয়েছিলেন বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধনে এসে সেই নন্দীগ্রাম থেকেই দিলীপের দিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন শুভেন্দু। বললেন, ‘‘আমি কোথায় লড়ব উনিই ঠিক করে দিন। একই আসনে আমার বিরুদ্ধে লড়েও দেখান।’’
এ দিন উত্তরবঙ্গে শুভেন্দুর নাম না করে বিঁধেছেন দিলীপও। বলেছেন, ‘‘কে কোথায় দাঁড়াবে সে তো পরের কথা। আগে উনি দেখুন ওঁর দলটা থাকবে কি না।’’
জল সম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন দফতরের ‘আদমি’ প্রকল্পের উদ্বোধনে নন্দীগ্রামে আসেন দফতরের মন্ত্রী। উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি ছিল সীতানন্দ কলেজে। সেখানে নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু বলেন, ‘‘মেদিনীপুরের সাংসদ পরামর্শ দিয়েছেন যে, আমি যেন অন্য কোনও বিধানসভা থেকে লড়াই করি। তিনি যেন ঠিক করে দেন, আমি কোথায় দাঁড়াব। শর্ত একটাই, ওঁকে আমার সঙ্গে লড়াই করতে হবে। এই শর্তে রাজি থাকলে আমিও রাজি আছি।’’
উল্লেখ্য, গত শনিবারই নন্দীগ্রামে কর্মসূচিতে এসেছিলেন দিলীপ। তার অনুমতি না থাকায় পুলিশ রেয়াপাড়ায় দিলীপদের মাঝপথেই আটকেছিল। সেখানে নাম না করে নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দুকে দিলীপ জানিয়েছিলেন, বিধানসভা আসনে তিনি যেন অন্য কোথায়ও লড়েন। নন্দীগ্রাম থেকে লড়লে বিজেপি তাঁকে হারাবে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে চ্যালেঞ্জ করার পাশাপাশি শুভেন্দু এ দিন নন্দীগ্রামে উন্নয়নের ছবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম-১ এবং ২ ব্লকে ২৯টি মজে যাওয়া নিকাশি খাল এবং মহম্মদপুরে মজে যাওয়া তিনটি পুকুর খনন করা হবে। এতে উপকৃত হবেন প্রায় ১৩০০ কৃষক পরিবার।’’ খালের একদিকে সুইসগেট থাকবে। নোনাজল যাতে চাষের জমিতে ঢুকতে না পারে সেই জন্যই এই ব্যবস্থা। পরবর্তীকালে ওই খালে মাছ চাষ করা হবে। খালের পাড়ে বৃক্ষরোপণ করা হবে। রবি শস্য ফলনের ক্ষেত্রে এই সেচ খালগুলি সাহায্য করবে। পাশাপাশি, নন্দীগ্রামে ২৪টি সমিতি গড়া হবে। প্রতিটি সমিতিতে ১৫০ থেকে ২০০ জন করে সদস্য থাকবেন। এর ফলে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ করতে পারবে ওই সমিতি।
এ দিন শুভেন্দু কেন্দ্রীয় সরকারেরও সমালোচনা করে। তিনি বলেন, ‘‘২০১২ সালের পর থেকে নন্দীগ্রামে একটা ইট গাঁথা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন তিনি তিনটি প্রকল্পকে স্পেশ্যাল প্রজেক্ট হিসেবে অনুমোদন দিয়েছিলেন। প্রায় ৬০০ ভূমিহারা সদস্য সেখানে গ্যাংম্যানের চাকরি পেয়েছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার একাধিক প্রকল্প বাতিল করেছে। ফলে বহু ভূমিহারা চাকরি পাননি। আমি তাদের পরামর্শ দেব, উপযুক্ত কাগজ দেখিয়ে আন্দোলন শুরু করুন।’’
এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জল সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রধান সচিব প্রভাতকুমার মিশ্র, হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের সিইও হরিশঙ্কর পারিক্কর, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবব্রত দাস ও জেলাশাসক পার্থ ঘোষ প্রমুখ।