শুভেন্দু অধিকারী ও কেশবপ্রসাদ মৌর্য। নিজস্ব চিত্র
বেকারত্ব নিয়ে বারবার সরব হয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। একদিকে রাজ্য সরকার যখন বলছে, পরিযায়ী শ্রমিক থেকে শুরু করে অনেক বেকারেরই কর্মসংস্থান হয়েছে এই বছরে, তখনই পাল্টা পরিসংখ্যান তুলছে গেরুয়া শিবির। শনিবার কোলাঘাটের কাঠচড়া ময়দানে এসে সেই প্রশ্নেই রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। বললেন, ‘‘২০১১ সালে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই রাজ্যের প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ স্থায়ী চাকরির পদ অবলুপ্ত হয়েছে। পরিবর্তে এসেছে চুক্তিভিত্তিক চাকরি। এটাই কি বাংলার মানুষ চেয়েছিলেন?’’ ।
শনিবার পরিবর্তন যাত্রায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিজেপি রথ যাত্রা শুরু করেছিল মেচেদা থেকে। এরপর বিভিন্ন পথ ঘুরে সেই রথ গিয়ে পৌছায় কোলাঘাটের কাঠচড়া ময়দানে। রথের প্রধান সারথী ছিলেন উত্তর প্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য। পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জোতির্ময় সিংহ মাহাতো এবং শুভেন্দু অধিকারীও পরিবর্তন যাত্রার সভায় যোগ দেন।
শুভেন্দু জানান, ‘‘২০১১ সালে মানুষ পরিবর্তন চেয়েছিলেন। তখন তৃণমূলের স্লোগান ছিল, ‘বদলা নয়, বদল চাই।’ আমরাও সঙ্গে ছিলাম। কিন্তু এই রাজ্য এগতে পারেনি। সংকীর্ণতা, প্রাদেশিকতা এবং আমিত্বের জন্য গত কয়েক বছরে এই রাজ্যের মানুষ পিছিয়ে গিয়েছে।’’
রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের উদ্দেশ্য করে শুভেন্দুর মন্তব্য, ‘‘পূর্ব মেদিনীপুরে ঘরে ঘরে স্নাতক রয়েছে। কিন্ত কর্মসংস্থানের কথা যদি বলেন, বাম আমলের তুলনায় সাড়ে ৫ লক্ষ স্থায়ী পদ অবলুপ্ত হয়েছে তৃণমূল সরকারের আমলে। বদলে এসেছে চুক্তিভিত্তিক চাকরি, এটাই কি বাংলার মানুষ চেয়েছিলেন? ২০১১ সালে যেখানে বাংলায় ১ কোটি ২০ লক্ষ বেকার ছিল নথিভুক্ত, আজ তা বেড়ে ২ কোটি হয়েছে, এরপরেও কি বাংলার বেকার যুবক যুবতীরা প্রশ্ন করবেন না?’’
পার্শ্বশিক্ষকদের বিষয় নিয়েও সরব হয়েছে গেরুয়া শিবির। বেকারত্বকে বারবারই শুভেন্দু, দিলীপ ঘোষণা সামনে তুলে আনতে চাইছেন। কারণ, রাজ্যের ভোটের একটা বড় অংশ যুবক যুবতী। তাঁদের কাছে টেনে আনতে পারলে কাজ অনেকটাই সহজ হবে।
শুভেন্দু সভা থেকে দাবি করেছেন, ‘‘২০১৪ সালের পরে স্কুল সার্ভিসের পরীক্ষা হল না। সাড়ে ৮ লক্ষ বি এড করা ছেলেমেয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন, তাঁদের চাকরীর ব্যবস্থা হল না। আড়াই লক্ষ বেসিক ট্রেনিং করা ছেলে মেয়ে ঘুরছেন। আর গত ২ দিন আগে দেখলেন ২০১৪ সালের ১৬ লক্ষ প্রাইমারীতে পরীক্ষা দিয়েছিল, তার মধ্যে ১৬ হাজার ২০০ জনকে মোবাইলে মেসেজ করে রাতের অন্ধকারে নিয়োগ করা হল।’’
পাশাপাশি উত্তর প্রদেশের উপমূখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্যও শনিবার রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘‘এতদিন পশ্চিমবঙ্গে হিংসার রাজনীতি চলেছে। তবে মোদী সরকার চায় শান্তির রাজ্য হোক এই বাংলা। উত্তর প্রদেশে কৃষকেরা ৬ হাজার টাকা করে অনুদান পেয়েছেন। কিন্তু এই রাজ্যে কৃষকদের বঞ্চিত করেছে মমতার সরকার।’’