গাছ লাগাচ্ছেন শুভেন্দু।
রটে গিয়েছিল, ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে জনসংযোগ সারতে নিজের বিধানসভা এলাকা নন্দীগ্রামে পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
মঙ্গলবার সকালে কথা মতো এলাকায় গেলেনও তিনি। কিন্তু দেখা গেল, ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি নয়, সেতু উদ্বোধনে হাজির হয়েছেন মন্ত্রী। সেখানে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত জনসংযোগ কর্মসূচি নিয়ে কোনও মন্তব্যও করলেন না শুভেন্দু। বরং বললেন, ‘‘যদি কোনও দরকার মনে করেন, সরাসরি আমায় জানাতে পারেন।’’
রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের নেতা, বিধায়ক, মন্ত্রীরা গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন। গ্রামবাসীর বাড়িতে খাচ্ছেন, রাতে থাকছেনও। কিন্তু শুভেন্দু নিজের এলাকায় ওই জনসংযোগ না করায় প্রশ্ন উঠছিল। দলীয় সূত্রে খবর, কয়েকদিন আগে নন্দীগ্রাম-১ ব্লক কার্যালয়ে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্ব। তারপর এ দিন প্রথম শুভেন্দু নিজের বিধানসভা এলাকায় যাওয়ায় দলেরই অনেকে ভেবেছিলেন, তিনি হয়তো ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি সেরে ফেলবেন।
সে ভাবনা অবশ্য সত্যি হয়নি। পরিবহণমন্ত্রী এ দিন সকালে নন্দীগ্রামের সোনাচূড়ায় যান। পরে ট্যাংরা খালের উপর নব নির্মিত ‘শহিদ স্মারক সেতু’ উদ্বোধন করেন। সেচ দফতরের বরাদ্দ করা ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকায় তৈরি হয়েছে ওই সেতু। সেতু উদ্বোধনের পরে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমি যে পদেই থাকি, আপনাদের পাশে সব সময় থাকব। উৎসবের দিনে পাঁচ বার ডাকলে হয়তো একবার আসি। কিন্তু, নন্দীগ্রামের মানুষ বিপদে পড়লে একবার ফোন করলেই পাশে গিয়ে দাঁড়াই।’’ বিকালে নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের বিরুলিয়া বাজার এলাকায় আরও একটি সেতুর উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।
‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়কদের এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের বাড়িতে থাকতে এবং অভিযোগ শোনার নিদান দিয়েছেন। কাদের সঙ্গে দেখা করতে হবে, সেই তালিকাও দিয়েছে দল। সেই মতো জেলার বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যেই একাধিক বিধায়ক গ্রামে গ্রামে গিয়েছেন, রাতও কাটিয়েছেন। সে দিক থেকে পিছিয়েই রয়েছেন পরিবহণ মন্ত্রী। কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি-ও। দলের জেলা সভাপতি (তমলুক) নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের মানুষ তৃণমূলকে চাইছেন না। তাই ‘দিদিকে বলো’ নিয়ে আগ্রহ নেই শুভেন্দুর।’’
তৃণমূল নেতৃত্ব সে কথা মানতে নারাজ। দলের এক ব্লক নেতার মতে, ‘‘শুভেন্দুবাবুর জনসংযোগ অত্যন্ত নিবিড়। নন্দীগ্রামের মানুষের জন্য উনি নিবেদিত প্রাণ। তাছাড়া এখন ওঁর রাজ্যব্যাপী সাংগঠনিক কাজের দায়িত্ব অনেক বেশি।’’ নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি মেঘনাদ পাল বলেন, ‘‘উনি এ দিন এলাকায় আসবেন, সে কথা গতকাল রাতে জেনেছি। তবে ওঁর কর্মসূচি কী হবে, তা এ দিনই চূড়ান্ত করবেন বলে জানানো হয়েছিল।’’