BJP

Suvendu Adhikari: ‘গড়’ রক্ষায় ময়দানে শুভেন্দু

এবারের বিধানসভা ভোটে পুরসভা এলাকাগুলিতে ভাল ফল করেছে বিজেপি। আর প্রায় চার দশক ধরে কাঁথি পুরসভার চাবিকাঠি ছিল অধিকারী পরিবারের হাতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:৩০
Share:

বুধবার কাঁথির পথসভায় শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।

দিনক্ষণ ঘোষণা হয়নি পুরভোটের। তবে ‘গড়’ রক্ষায় ময়দানে অবতীর্ণ অধিকারী পরিবারে সদস্য তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী।

Advertisement

কাঁথি পুরসভায় ‘দখল’ রাখার জন্য ডিসেম্বরের প্রথম দিনেই পদযাত্রা করলেন শুভেন্দু। বুধবার কাঁথি শহরের মেচেদা বাইপাস থেকে চৌরঙ্গী, বড় ডাকঘরের সামনে হয় মিছিল পৌঁছয় পুরনো দিঘা বাস স্ট্যান্ডে। সেখানে শুভেন্দু একটি সভা করেন। সেই পথসভায় শুভেন্দু বলেন, ‘‘১৯৮৬ সালে চারশোর বেশি সাংসদ থাকা কংগ্রেসের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী কাঁথিতে সভা করেছিলেন। তার পরেও শিশির অধিকারীর নেতৃত্বে পুর বোর্ড তৈরি হয়েছিল।’’ তিনি বলেন, ‘‘পরে সিপিএমের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুও এসেছিলেন। তখন তৃণমূল এবং বিজেপি জোট তৈরি করে শিশির অধিকারীর নেতৃত্বে পুরসভার বোর্ড তৈরি করা হয়েছিল। এবার বিধানসভা ভোটের আগে ২৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী সভা করেছিলেন। তার ঠিক একদিন পরে চাষের জমিতে সভা করে অনেক বড় বড় বক্তব্য রেখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ, চারটি আসনে বিজেপি প্রার্থীরা জয়ী হয়েছিলেন।’’

এবারের বিধানসভা ভোটে পুরসভা এলাকাগুলিতে ভাল ফল করেছে বিজেপি। আর প্রায় চার দশক ধরে কাঁথি পুরসভার চাবিকাঠি ছিল অধিকারী পরিবারের হাতে। গত বছর শুভেন্দুর ছোটভাই সৌমেন্দু অধিকারীকে কাঁথি পুরসভার প্রশাসকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কার পরে সৌমেন্দু অধিকারী এবং ১৫ জন প্রাক্তন কাউন্সিলর পদ্মবনে যোগ দিয়েছেন।

Advertisement

এদিন তাঁরা অবশ্য কেউই হাজির ছিলেন না। সেই প্রসঙ্গ টেনে নন্দীগ্রামের বিধায়ক বলেন, ‘‘আমার হাতে তৈরি হওয়া কয়েকজনকে নিয়ে লম্ফঝম্পও করছেন। যাঁদের পরিচয় পত্র আমি বানিয়ে দিয়েছি, তাঁদেরকে ডেকে পুর প্রশাসক করা হয়েছে। এখন তাঁদেরকেই আবার ছুড়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।’’ রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গেলেও যে কাঁথি তাঁদের দখল থাকবে, এ দিন সেই বার্তায় দিচ্ছেন শুভেন্দু। মুখে অবশ্য এদিন শুভেন্দু দাবি করেছেন তিনি কাঁথিতে পুরসভার ভোটের প্রচার এখনও শুরু করেননি। তবে কয়েকদিন আগেই খেজুরির একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে তিনি কাঁথিতে 'সিনেমা' দেখাবেন বলে বিরোধীদের বার্তা দিয়েছিলেন।

ভিড়ে ঠাসা এ দিনের কর্মসূচিতে শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘২০০৫ সালে লক্ষ্মণ শেঠকে হারিয়েছি। তারপর সে সময় এখনকার কায়দাতেই পুরসভা দখলের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু শিশিরবাবু রিকশায় চেপে আর আমি কখনও সাইকেলে চেপে, কখনও মোটরবাইকে চেপে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরেছি। বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের জোট করে শিশিরবাবুর নেতৃত্বে পুরসভার বোর্ড তৈরি হয়েছিল।’’ নিজের ‘গড়ে’ পুরসভার ভোটের লড়াইয়ে নামার আগে পুরনো সহকর্মীদের পাশে ফিরে পাওয়ার জন্য শুভেন্দুর আহ্বান, ‘‘আমরাই মর্যাদা দিয়েছি। আগামী দিনেও সকলকেই মর্যাদা দেব।’’

এদিন বিজেপির পথযাত্রা শুরু হওয়ার আগে সকালে কাঁথি শহরের সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড থেকে একটি মোটরবাইক মিছিল করেছেন তৃণমূল কর্মীরা। ওই মিছিলে বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির পতাকা ছেঁড়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দু। ওই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তরুণ মাইতি বলেন, ‘‘প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে আমরা কর্মসূচি করেছি। বরং উনি বিরোধী দলনেতা হয়েও অনুমতি ছাড়াই সভা করছেন।’’

আর শুভেন্দুর অন্য সমস্ত দাবি নিয়ে তরুণের বক্তব্য, ‘‘শুভেন্দু আগে পরিষ্কার করে বলুন কাঁথিতে পুরসভার ভোটে তৃণমূলের প্রতিদ্বন্দ্বী কারা! যদি বিজেপি হয়, তবে ২১টি ওয়ার্ডে হারবে। আর যদি অধিকারী পরিবারের সঙ্গে লড়াই হয় তবে পুর ভোটের ময়দানে কী করতে হয়, তা শহরবাসী বুঝিয়ে দেবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement