ফাইল চিত্র।
বিজেপির পতাকা হাতে নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে আগেই দু’টি সভা করেছেন। এ বার জেলার তৃতীয় সভা তৃণমূল সাংসদ মানস ভুঁইয়ার ‘গড়ে’ করতে চলেছেন শুভেন্দু অধিকারী!
আজ, বুধবার সবংয়ের প্রবেশদ্বার তেমাথানিতে সভা করবে বিজেপি। দুপুর ২টোয় ওই সভায় মুখ্য বক্তা হিসাবে উপস্থিত থাকবেন শুভেন্দু। জনসভা ঘিরে মঙ্গলবার প্রস্তুতি চলেছে জোরকদমে। শুভেন্দুর সঙ্গেই বিজেপিতে যাওয়া জেলা কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতির তত্ত্বাবধানে চলছে আয়োজন। অমূল্যের দাবি, “এক ঐতিহাসিক সভা দেখবেন সবং বিধানসভার মানুষ। তৃণমূলের পুরনো কর্মীদের ৮০ শতাংশ এই সভায় বিজেপিতে যোগ দেবেন। আর ফেব্রুয়ারির আগেই তৃণমূল তছনছ হয়ে যাবে।”
পাল্টা সভা ডেকেছে তৃণমূলও। কাল, বৃহস্পতিবার ওই তেমাথানিতেই সভা হবে জানিয়ে জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী এখন একই কুমিরছানাকে বারবার দেখাচ্ছেন। আমাদের দলে থেকেও যাঁরা বিজেপির হয়ে কাজ করছেন, তাঁরাই ওই সভায় যাবে। নিষ্ঠার সঙ্গে যাঁরা তৃণমূল করেন তাঁরা কেউ যাবেন না। আমি ৮ জানুয়ারি সবংয়ে সভা করে দেখিয়ে দেব তৃণমূল কোথায় আছে।”
যে ব্লকে শুভেন্দুর সভা সেখানকারই ভূমিপুত্র তৃণমূল সাংসদ মানস ভুঁইয়া। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পরে মানস-সহ একঝাঁক নেতা কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেন। তার পর থেকেই পুরনো তৃণমূল নেতা প্রভাত মাইতি, অমূল্য মাইতিদের সঙ্গে মানস অনুগামীদের সংঘাত বাধে। আদি-নব্য তৃণমূলের সেতু গড়ে ২০১৭ সালে শুভেন্দুর নেতৃত্বেই সবং বিধানসভা উপ-নির্বাচনে জেতেন মানস পত্নী গীতা ভুঁইয়া। তার পরে অবশ্য চার বছর কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সবংয়ে আসেননি শুভেন্দু। গত পঞ্চায়েত থেকে লোকসভা নির্বাচনে অমূল্য ও মানস অনুগামীদের সংঘাতও পৌঁছয় চরমে।
বিজেপি সূত্রে খবর, শুভেন্দুর সভায় থাকবেন তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি প্রভাত মাইতি-সহ একঝাঁক নেতা-কর্মী। প্রভাত বলেন, “আমার স্ত্রী মারা গেলে দলের নেতৃত্ব খোঁজ নেননি। শুভেন্দু কিন্তু এসেছিলেন। নৈতিকতার জন্যই আমি শুভেন্দুর সভায় যাব।” তবে দলত্যাগ বিরোধী আইন ঠেকাতে তাঁরা বিজেপির পতাকা এখনই ধরবেন না বলে অমূল্য জানিয়েছেন। তবে তাঁর দাবি, “তৃণমূলের পুরনো কর্মীরা এসে বিজেপিকে আরও শক্তিশালী করবে।”
শুভেন্দুর সভা নিয়ে মানস ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের ব্লক সাধারণ সম্পাদক আবু কালাম বক্সের বক্তব্য, “অমূল্য মাইতিদের মতো কয়েকজন ২০১৪ সাল থেকেই বিজেপির হয়ে কাজ করছেন। কিন্তু এখন যেভাবে বিজেপির অভ্যন্তরে নব্য-আদি লড়াই চলছে তাতে বিজেপি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না।”